রাজশাহী ব্যুরোঃ করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাবার সংকটে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে নিরসলভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সরকারি সহযোগিতা ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ তহবিল গঠন করে সামর্থ্যবানদের সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা নিয়ে মেয়রের কাছে হাজির হয়েছেন স্কুল ছাত্র রাফসান আরাফাত। স্কুল ছাত্রের এই কাজে অভিভূত মেয়র।
সে শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র। মহানগরীর ২৪নং ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর কালুর মিস্ত্রির মোড়ের বাসিন্দা আরাফাত রুবেল ও আলিয়া রুপি দম্পতির সন্তান।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় বাবাকে সাথে নিয়ে নগর ভবনে আসে স্কুলছাত্র রাফসান। অসহায় মানুষের সহযোগিতায় ত্রাণ তহবিলের জন্য সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের হাতে জমানো টাকাসহ মাটির ব্যাংক তুলে দেয় সে। স্কুল ছাত্রের এই কাজ হৃদয় ছুঁয়ে যায় মেয়রের, তার মাথায় হাত রেখে দোয়া করেন, মাটির ব্যাংকটি নিজের টেবিলে রেখে দেন।
স্কুলছাত্র রাফসান জানায়, সে দুই বছর ধরে তাঁর মাটির ব্যাংকে টাকা জমায়। বাবা-মা, নানা-নানী, খালাসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন দিবস ও ঈদ উপলক্ষ্যে যে অর্থ দেয়, তার মধ্যে কিছু অর্থ সে তার মাটির ব্যাংকে জমা রাখে। করোনা পরিস্থিতে গরীব মানুষ খাবার পাচ্ছে না, টিভিতে খবর দেখে অসহায় মানুষদের খাবারের জন্যে এই অর্থ দিয়েছে।
রাফসানের পিতা আরাফাত রুবেল বলেন, মেয়র মহোদয় রাজশাহীর অসহায় সকল মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা দিতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সমাজের সামর্থবান মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।বিষয়টি আমরা পরিবারে আলোচনাকালে রাফসান তার মাটির ব্যাংকে জমানো আনুমানিক সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দিতে চায়। ছেলের উৎসাহে তাকে নিয়ে নগর ভবনে হাজির আসি।
এ ব্যাপারে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, অসহায় মানুষদের জন্য আমি সমাজের সামর্থবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পর অনেকেই এগিয়ে আসছেন। আজ স্কুল ছাত্রের রাফসানের মাটি ব্যাংক নিয়ে হাজির হওয়ার ঘটনাটি আমার হৃদয় ছুয়ে গেছে, আবেগ্লাপুত করেছে। এটি মানবিকতার এক দৃষ্টান্ত ও বার্তা।
মেয়র আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান করছেন। রাজশাহীতে বিত্তবানদের সহযোগিতায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষকে সহায়তা করছি। সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসি, তবে কেউ খাদ্য সহায়তার আওতার বাইরে থাকবে না।
উল্লেখ্য, সরকারি সহায়তা ও সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্যোগে রাজশাহীতে প্রথম পর্যায়ে ২০ হাজার পরিবার এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো প্রায় ২৫ হাজার পরিবারকে চাল,ডাল ও আলু প্রদান করা হয়েছে। বতর্মানে ৩০টি ওয়ার্ডে ২১ হাজার পরিবারের জন্য ২১০ টন সরকারি চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। ধারাবাহিকভাবে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যহত রাখতে গত ১৪ এপ্রিল এক বিবৃতিতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ত্রাণ তহবিলে নগদ অর্থ অথবা নিত্য প্রয়োজনী পণ্য প্রদানে মহানগরবাসীকে আহ্বান জানান মেয়র।