বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ ধানের পাতা। উঠোন ভরা সোনালী ধানের যে স্বপ্নে বুনে এসেছিলেন, তা যেন সত্যি হয়ে হাতছানি দিচ্ছে কৃষকের জীর্ণ কুটিরে। যমুনায় জেগে ওঠা চরে জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা। মৃদু হাওয়া দোল খাওয়া সবুজ পাতাগুলোর মত তাদের হৃদয়ও যেন দুলে দুলে ওঠছিল। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, খোকশাবাড়ি ও ছোনগাছা ইউনিয়নের যমুনার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
চরাঞ্চলের মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- একসময় মাঠভরা ফসল, গোলাভরা ধান আর যমুনার রূপালি মাছ ছিল চরের মানুষের ঘরে ঘরে। গত দুই যুগ ধরে নদীভাঙন আর প্রলয়ঙ্করী বন্যায় একে একে সবকিছুই যমুনার গর্ভে চলে যায়। ধীরে ধীরে সহায়-সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে কৃষকরা। সব হারিয়ে শহররক্ষা বাঁধের ওপর পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করতেন চরবাসী।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা চরের কৃষক বায়েজিদ বলেন, বাবার প্রায় ১৫ বিঘা আবাদি জমি এক সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছিল। নদী ভাঙনরোধে যমুনার বুক চিরে ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ফলে জেগে ওঠেছে আমাদের বাড়িসহ প্রায় পাঁচ বিঘা আবাদি জমি। এই জমিতে আমি ধান আবাদ করেছি। গাঢ় সবুজ পাতাগুলো দেখে মনে হচ্ছে ফলনও খুব ভাল হবে।
কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন, চরাঞ্চলের জমি জেগে ওঠায় হতদরিদ্র চরবাসীর ভাগ্য বদলে গেছে। এখন আর চরের মানুষের অভাব-অনটন নেই। পল্লী বিদ্যুতের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আধুনিকতার ছোঁয়াও পৌঁছে যাচ্ছে চরাঞ্চলে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুর হক বলেন, সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলে প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হয়। ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ হওয়ার পর আরও চার হাজার হেক্টর জমি নতুন করে চাষযোগ্য হয়েছে। এসব জমিতে ধান গমের পাশাপাশি ব্যাপকহারে ভুট্টা ও চীনাবাদাম আবাদ করছেন কৃষকরা।সূত্র :বাংলা ট্রিবিউন।
আরও পড়ুন : “অর্গানিক স্পেশাল মশলা”য় একজন নারীর পথচলা