1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

রমজান–দ্রব্যমূল্য–জীবিকার ত্রিমাত্রিক সন্ধিক্ষণে মানুষ: নাইম ইসলাম নিবির 

  • Update Time : শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২
  • ২৭৭ Time View

রমজান–দ্রব্যমূল্য–জীবিকার ত্রিমাত্রিক সন্ধিক্ষণে মানুষ

— নাইম ইসলাম নিবির 

 

করোনা মহামারির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও সম্পূর্ণভাবে নির্মুল হয়নি। এখনও প্রতিদিন নতুন করে মানুষ করোনা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। তবে সংক্রমণ আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। জনগণকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা ও ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম বেশ গুরুত্বের সাথে বাস্তবায়িত করেছে বর্তমান সরকার।

করোনা ভাইরাসের মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মানুষের আয় যে হারে কমেছে তাতে মানুষ প্রচণ্ড রকমের আর্থিক সংকটে পড়ে গিয়েছে। শত কথার মাঝে বাস্তবতা হলো কোভিডের শুরুতে প্রতিটি মানুষ তাদের দীর্ঘদিনের কষ্টার্জিত সঞ্চয় ভেঙে সাংসারিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। কেউ কেউ আবার জীবন ও জীবিকার চাকা সচল রাখতে নানাবিধ ধার-কর্জ বা ঋণ গ্রহণ করেছে। ফলশ্রুতিতে ২০২২ সালের এপ্রিলে এসে নতুন করে ধার-কর্জ চাওয়ার মতো রাস্তাটিও সাধারণ মানুষের নেই।

এমনই এক ক্রান্তিলগ্নের সঙ্গে নতুন করে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মতো যন্ত্রণা। এটি যন্ত্রণা এজন্য যে বর্তমান ঊর্ধ্বগামী দ্রব্যমূল্যের বাজারে একটি সাধারণ পরিবারকে প্রতিদিন বাজারে গিয়ে যে বিমুখ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। এবং সেই বিমুখতা যে তার সাংসারিক ও সামাজিক জীবনে কত বড় বেদনা কিংবা যন্ত্রণা সৃষ্টি করে তা আপনি আমি কিংবা আমাদের যাদের পেট ভরা তারা অনুধাবন করতে পারব না। তবে আপনি যদি মনুষ্যবান ব্যক্তি হোন। আপনার শরীর মন মস্তিষ্ক যদি কালো টাকার সংস্পর্শে গড়া না হয় তাহলে আপনিও আমার মতো করে অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন।

এই রমজান মাসে আমাদের দেশের এই আমারই ব্যবসায়ী ভাই বোন চাচা মামা খালুরা যেভাবে নির্দয়ভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে আমাদের পকেট কাটে পৃথিবীর অন্যকোনও মুসলিম কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় রাষ্ট্রের অন্য কোনও জাতি এরকমটি করেন কিনা তা আমার জানা নেই। দামি কিংবা বিদেশি ফল ও সবজির কথা বাদই দিলাম সামান্য আমাদের দেশে উৎপাদিত ফল লেবু, তরমুজ সবজির মধ্যে বেগুন মরিচ রমজান মাসে যে দামে বিক্রি হয় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করলে রমজান মাসে ধর্মকর্মের প্রতি মনোযোগ হারিয়ে প্রকৃত মুমিনগণের হতাশ হওয়া ছাড়া উপায়ান্তর থাকবে না। রমজানের প্রকৃত শিক্ষা কি শুধু বাংলাদেশে এসেই হারিয়ে যায়। নাকি আমরা হারিয়ে যাই অর্থলিপ্সার কাছে। সে–প্রশ্নের উত্তর সম্মানিত পাঠকগণের বিবেকের উপর ছেড়ে দিলাম।

সম্পূর্ণ সাংসারিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের কথা বাদই দিলাম বর্তমান সময়কার বাজারে ইফতারের মেন্যুতে এক হালি লেবু আর একটি তরমুজ খেতে হলে একজন খেটে-খাওয়া দিনমজুরের অর্ধদিবসের কামাই লাগে। এক কেজি গরুর মাংস কিনতে হলে একমাস আগে থেকে পরিকল্পনা করে টাকা জমাতে হয়।

বহির্বিশ্বে হঠাৎ জ্বালানি ও ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধি সব ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলছে। বাড়তি খরচ সামলাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। যার ফলে টিসিবির ট্রাকের পেছনে মানুষের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এজন্য মানুষ এখন কোভিডের আতঙ্ককে আমলে না নিয়ে জীবিকার যুদ্ধকেই অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।

আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাব আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ঘটনাতে ব্যর্থ হচ্ছি। অন্যদিকে যথাযথ জবাবদিহির প্রকট অভাবের কারণে সারাদেশের সড়কের মতোই আড়ৎ ও বাজারে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল সিন্ডিকেট। এতকিছুর মধ্য দিয়েও কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অনেকটাই গতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।

এর মূল কারণ হলো মানুষ; জীবন ও জীবিকার বিতর্কে জীবিকাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। একইভাবে কোভিডের আক্রমণে সকল কিছু স্থবির থাকলেও দেশের কৃষি খাত একদিনও থেমে থাকেনি। মানুষ নিজের প্রয়োজনে মাঠে ছুটে বেরিয়েছে। কৃষি খাতের অবদানের কারণে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বড় একটা ধাক্কা সামাল দিতে পেরেছে। কিন্তু পারিবারিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো নাজুক পর্যায়ে রয়েছে।

আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পারি দিয়ে ৫১ বছরে পা দিয়েছি। সম্পূর্ণ এ–সময়টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশ সাধনে বেশ কয়েকটি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা দেখেছি আমাদের অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে কৃষি খাত, বেসরকারি খাত, রেমিট্যান্স, ক্ষুদ্রঋণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

অন্যদিকে আমাদের কিছু সম্ভাবনা উল্টোপথের দিকে ঘুরে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতির উল্লিখিত খাতের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক উন্নয়নে খুব বেশি অগ্রগতি আমরা অর্জন করতে পারিনি। কিংবা অগ্রগতি হলেও আমরা তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। এবং এই ব্যর্থতার বড় কারণ সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতি। যা সকল কার্যক্রমে আমাদের বড় বাধা।

সম্মানিত পাঠক, এবার কৃষি ও বেসরকারি খাত- এ দুটি বিষয় নিয়ে একটু আলোচনা করি। একটি বিষয়ে আপনারা একমত হবেন যে  অর্থনীতির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে আমরা আজ বর্তমান অবস্থা থেকে আরও বহু দূর এগোতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এখানে একটা বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, নিজ নিজ অবস্থানে নিজের দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করা। আমরা যদি প্রত্যেকেই নিজের উপর অর্পিত কাজটি ভালোবেসে দায়িত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে দেখতাম তাহলে আমাদের যে অপূর্ণতাগুলো রয়েছে তার সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে আনতে সক্ষম হতাম। কিন্তু আমাদের নিজেদের দায়িত্ববোধ বুঝতে না পারার কারণে কিংবা দায়িত্বের প্রতি উদাসীন ভাবসম্পন্ন হবার  কারণে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অনেক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রেই অপরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছিলাম। আমাদের যথাযথ নেতৃত্বের সমন্বয় ও সক্ষমতা অনুযায়ী লকডাউনের সময়ের পরিস্থিতিকে আরও ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করতে পারতাম। অথচ সে সময়ে আমারা অনেক ক্ষেত্রে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। যার কারণে আমাদেরকে আজও মাসুল দিতে হচ্ছে।

এতোকিছুর মধ্যেও আমাদের জাতীয় আয় বেড়েছে। মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার অতিক্রম করেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আয় বৈষম্যও বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আজও তেমনটি করে দক্ষতা দেখাতে পারেনি। যেমনটি জাতি আশা করেছিল। তবে সামষ্টিক অর্থনীতির সুযোগগুলো অনেকাংশে সামাল দেওয়া গিয়েছে। আমাদের তৈরি পোশাক খাত, প্রবাসী আয় সহ বেশ কিছু খাত হতে জিডিপির মাত্রা উঠে এসেছে। বর্তমান সরকারের সুদক্ষ প্রচেষ্টার ফলে কৃষি উৎপাদনে তেমন বড় ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর একক প্রচেষ্টায় সামষ্টিক অর্থনীতি মোটামুটি ভালোভাবে সামাল দেওয়া গিয়েছে। অবশ্য পারিবারিক অর্থনীতির বহুমুখী সংকটগুলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের ৫৫ শতাংশ জিডিপি সেবা যে খাত থেকে আসে সে খাত করোনার আক্রমণে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। সুতরাং সামষ্টিক অর্থনীতির সূচক দিয়ে সার্বিক অর্থনীতির অবস্থান বিচার বিশ্লেষণ করা যাবে না। করোনা ভাইরাসের থাবায় মানুষের আয় অনেক কমে গিয়েছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখ সংখ্যক। অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। যাদের অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছে। করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে গিয়েছে আবার সবকিছু অনেকটা স্বাভাবিকের পথে কিন্তু এখনও আমাদের জিডিপি যে হারে বেড়েছে সে হারে কর্মসংস্থান বাড়েনি। উল্টো কমেছে।।

দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববাসী করোনা মহামারির হাত থেকে মুক্তি পায়নি। করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ চলমান তবুও মানুষের মাঝে আতঙ্ক রয়েই গেছে। এ আতঙ্কের চেয়ে মানুষের বেশি সংকট এখন জীবিকা নির্বাহে। রমজান মাস সামনে ঈদ বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে বাংলাদেশের বাজারদরে নিত্যপন্যের দাম এখন আকাশচুম্বী। কিছু মুনাফালোভী অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে জীবিকার কঠিনতম সন্ধিক্ষণে এখন মানুষ।

কোভিড-১৯ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল একটি ধাক্কা দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ব অর্থনীতিও অনেক বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। তবে জীবন আর জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশের জনগণ খুব দ্রুতই জীবিকা নির্বাহের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। অর্থাৎ প্রয়োজনের তাগিদে কিংবা অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে যাই বলিনা কেনও করোনা ভাইরাসকে উপেক্ষা করে আমরা খুব দ্রুতই কর্মের সন্ধানে মাঠে নেমে গিয়েছিলাম। অবশ্য ২০২০-২০২২ দুই বছরের ব্যবধানে আমাদের অর্থনীতির হাল অথবা বেহাল খুঁজতে হবে দুই ভাবে। একটি হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনীতি। অন্যটি হচ্ছে পারিবারিক অর্থনীতি।

যদিও জীবিকার টানে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি যে পরিমাণ ধাক্কা খেয়েছিল তা সামাল দেয়া গেলেও পারিবারিক অর্থনীতি এখনো বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। অনেক মানুষ বেকার হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ মানুষের আয় কমে গিয়েছে। অন্যদিকে নতুন করে কেউ কাজ পাচ্ছে না। তবে আমাদের রপ্তানি বা রেমিট্যান্স, কৃষিসহ অভ্যন্তরীণ খাতগুলো আশঙ্কার চেয়ে অনেক কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের সেবা খাত এখনও বিপর্যস্ত। দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিও থেমে গিয়েছে। অবশ্য দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি নিয়ে সার্বিকভাবে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ কম। কেননা আমাদের অনেক খাতই এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। বিশেষ করে কর্মসংস্থানের জায়গাটায় এখনো অনেক ঘাটতি রয়েছে। উৎপাদন প্রক্রিয়া মোটামুটি স্বাভাবিক হলেও বিশ্বপরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকায় সরবরাহ, বণ্টন ও মূল্য প্রক্রিয়ায় ব্যাপক নেগেটিভ প্রভাব বিস্তার করছে।

করোনা ভাইরাসের ফলে আমাদের অর্থনীতির গতি কয়েকটি ধাপে স্থবির হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশে যেসকল রপ্তানি নির্ভর প্রতিষ্ঠান ছিল তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার মধ্যে তৈরি পোশাক খাতসহ কিছু প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক হতে পারলেও অনেক খাত এখনও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারেনি। যেসকল হ্যাচারিতে কাঁকড়া ও চিংড়ি চাষাবাদ করে রপ্তানি করা হতো সেগুলো এখনও পূর্বেকার মতো চাষাবাদ ও রপ্তানি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। কেউবা চালান হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। যা কাটিয়ে উঠতে এবং বাজার ধরতে আরও সময় প্রয়োজন। আরেকটি বিষয় হলো লকডাউনে কিছু সেক্টর তাৎক্ষণিক একটা ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছিল, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে লকডাউন সহ সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়া হলেও মানুষের সাধারণ অর্থনৈতিক চাহিদাগুলো এখনও আগের অবস্থানে ফিরে আসেনি। যেমন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নিজেদের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন যাবত বন্ধ থাকার কারণে অনেকগুলো সেক্টর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মূল কারণ শিক্ষা কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বড় একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে যেগুলো এখন অবদি পরিপূর্ণভাবে সচল হয়ে ওঠেনি। আমাদের জিডিপিতে সেবা খাতের অবদান প্রায় ৫৫ শতাংশ। করোনার থাবায় এ খাতটিও নানাবিধভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিপর্যস্ত। সর্বোপরি নানাবিধ বাস্তবিক পরিস্থিতিতে সুস্পষ্ট বিষয় এই যে, করোনার নানামুখী অভিঘাত এখনো চলমান রয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা উক্ত অভিঘাত মোকাবিলায় প্রণোদনা প্রদান করতে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

আবার করোনার প্রভাব কাটার আগেই নতুন এক চ্যালেঞ্জ জাতির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে আর তা হলো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে এসে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় প্রবেশ করা। এখানে বিবেচ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শুধু অর্থনীতির উন্নয়নই প্রতিপাদ্য নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, মানবসম্পদ এসব বিষয়ও অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ-সকল বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে। করোনা পরবর্তী সময়ে মানবসম্পদ উন্নয়নটা সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। কেননা করোনার কারণে অন্য খাতগুলো ঘুরে দাঁড়ালেও শিক্ষা খাতকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের একটি হয়ে দাঁড়াবে। ফলে সামনের দিনগুলোয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর মানবসম্পদ উন্নয়ন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত মানবসম্পদ ব্যবস্থাকে আবার কীভাবে আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে তা এখনও অনিশ্চিত। উক্ত বিষয়াদির বাইরে যেসব বিষয় রয়েছে যেমন রপ্তানি, রেমিট্যান্স মানুষের গড় আয় এসব ক্ষেত্রে আগের তুলনায় কিছুটা হলেও অগ্রগতি হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে অগ্রগতিতে নতুন প্রবৃদ্ধির চালক খুঁজতে গেলে শুধুমাত্র সস্তা শ্রম দিয়ে তা বাস্তবায়িত করা যাবে না।

 

নাইম ইসলাম নিবির : প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য রাজনীতিক ও কলাম লেখক।

nayemulislamnayem148@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..