বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:
আনলকের প্রথম ধাপেই রেকর্ড সংক্রমণ গোটা রাজ্যে। যদিও বিশেষজ্ঞ মহলের রেকর্ড সংক্রমণ কথায় আপত্তি রয়েছে। কারণ, প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। সেই হিসেবে হচ্ছে নতুন রেকর্ডও। বাংলায় নতুন করে ৪৪৯ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এটাই করোনা–কালে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ। এই আক্রান্তদের মধ্যে এবার কলকাতারও আগে চলে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। শেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ জন। এই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন থেকে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এতজন সংক্রমণের খবর আসতেই চারদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এতদিন জেলাগুলি নিয়ে কিছুটা স্বস্তি ছিল রাজ্য সরকারের। পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমণের খবর প্রায় ছিলই না। কিন্তু একসঙ্গে ৮৪ জন সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। বুলেটিন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের পর সংক্রমিতদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ জন। এদিন প্রায় সব জেলা থেকেই সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। উত্তরবাংলার মালদায় ২১ জন এবং কোচবিহারে ১৫ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে সবচেয়ে কম সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই জেলায় শেষ ২৪ পরগনায় মাত্র একজন সংক্রমিত হয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার বাংলায় সংক্রমিত হয়েছিলেন ৪১৭ জন। শনিবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৩৫ জন। রবিবার তা চলে যায় একেবারে ৪৪৯ জনে। এর ফলে বাংলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ৮ হাজারের গণ্ডী। এদিন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ হাজার ১৩৭ জন। বুলেটিন থেকে জানা গিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে কলকাতার ৭ জন, উত্তর ২৪ পরগনার ৩ জন, হাওড়ার ২ জন এবং দার্জিলিংেয়র ১ জন রয়েছে। রাজ্যে করোনায় প্রত্যক্ষ মৃত্যুর সংখ্যা ৩২৪ জন। এ ছাড়া কো–মর্বিডিটিতে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের। ফলে করোনা আক্রান্তের মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯৬ জনে।
তবে এদিনও সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা কম ছিল না। করোনা মুক্ত হয়ে শেষ ২৪ ঘণ্টায় বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১৮৪ জন। ফলে রাজ্যে মোট করোনা–মুক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০৩ জন। করোনা আক্রান্ত অবস্থায় এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ হাজার ৪৮৮ জন। এইসব খবরের মধ্যেই এইমসের একটি বক্তব্য প্রকাশ্যে আসায় চারদিকে আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলারিয়া বলেছেন, ‘ভারতে এখনও করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছয়নি।’ প্রশ্ন হল, সংক্রমণ আরও কত বেশি হলে তবে তাকে সর্বোচ্চ বলা হবে? এমন আশঙ্কায় প্রহর কাটাচ্ছে বহু ভারতীয়। এমনকী, বাঙালিও।