নিজস্ব প্রতিবেদক: বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে এই কাজ আরো দ্রুত করা হবে বলেও জানান তিনি। আজ বুধবার দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের কর্মীদের করোনা চিকিৎসার জন্য ৬০ শয্যার বিশেষায়িত ইউনিট ও নতুন হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন শেষে তিনি এইসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বন্দরের সঙ্গে জড়িতদের সাহসী পদক্ষেপের কারণে করোনাকালে অপারেশন এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি। পৃথিবীর কোনো দেশ প্রস্তুত ছিলো না কোভিড-১৯ এর জন্য। উন্নত দেশেও স্বাস্থ্যসেবা থমকে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের সাহসিকতা ও সরকারের সাহসী ব্যবস্থাপনা ছিল। একটি ল্যাব দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল আমাদের। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে গেছি। বিস্ময়কর নেতৃত্বে এ সংকট মোকাবিলা করছেন দেশের মানুষ। কোভিড-১৯ আমাদের অর্থনীতিতে যে ধাক্কা দিয়েছে তা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে চেষ্টা চলছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের লাইফ লাইন। চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। কোভিড-১৯ চিকিৎসায়ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকবে বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের আওতায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বে টার্মিনাল, পিসিটিসহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্দরের জন্য শুধু উদ্ধারকারী জাহাজ নয়, হেলিকপ্টার কেনারও পরিকল্পনা রয়েছে। ১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের সেরা ১০০ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের তালিকায় ৬৪ তম অবস্থানে এসেছে। আমরা চাই বন্দরকে ৩০-৫০তম অবস্থানের মধ্যে আনতে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্দরে হাজারো লোকের আনাগোনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দরের লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করেছেন। কিছু সহকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন তারা। একমুহূর্তও বন্ধ ছিল না অপারেশন কাজ। স্টেক হোল্ডাররা সহযোগিতা করেছেন। দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি, একচুলও পিছপা হবো না লক্ষ্য থেকে।
তিনি বলেন, বন্দর হাসপাতালে ৫০ শয্যার করোনা ইউনিটে ১৩ জন চিকিৎসক, ৩৬ জন নার্সসহ ১৫৯ জন নিয়োগ দিয়েছি। তারা সেবা দেওয়ার জন্য এখানে এগিয়ে এসেছেন। বিএসসি, মেরিন একাডেমি, এনএমআইর প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবো। আমাদের লোকজনকে আমরা সেবা দিতে পারলে নগরের হাসপাতালে ভিড় কমবে, নগরবাসী উপকৃত হবেন।
বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম জানান, কোভিড-১৯ ইউনিটে ২০ জনের বেশি রোগীকে হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬টি ন্যাজাল ক্যানোলা থাকবে। ইতিমধ্যে ২টি হাসপাতালে এসে গেছে, বাকি ৪টি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসকদের রাখার জন্য আবাসিক হোটেলের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে। বাকিদের হাসপাতাল এলাকাতেই থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ সময় বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নৌ প্রতিমন্ত্রী হাসপাতাল ভবনের ফলক উন্মোচন করেন। হাসপাতালের করোনা ইউনিট ঘুরে দেখেন এবং একটি গাছের চারা রোপণ করেন।