1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

“শাহজাদার গলায় প্ল্যাকার্ড: প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি না কুদৃষ্টি?”

  • Update Time : শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১
  • ৩০১ Time View

“শাহজাদার গলায় প্ল্যাকার্ড: প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি না কুদৃষ্টি?”

— নাইম ইসলাম নিবির। 

আমার আজকের নিবন্ধখানা যে ব্যক্তিটিকে  উদ্দেশ্য করে রচনা করতে চলেছি তিনি বাংলাদেশের এই সময় এবং সেই সময় দুটোতেই সমানভাবে আলোচিত। সেই সময় বলতে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম মাওলা রনির পরিবর্তে নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্তির পর তাকে নিয়ে সারা বাংলাদেশের সুশীলসমাজে ব্যাপক কৌতুহল–উদ্দীপনা–উদ্বেগ এবং আলোচনার জোয়ার বয়ে গয়েছিল। এছাড়াও অন্য পরিচয়ে তিনি বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার স্নেহের ভাগিনা। যার সুবাদে তিনি শুধু পটুয়াখালী–৩ আসনের সাংসদ পরিচয়ই নয় সাথে জাতির ভাগিনা হিসেবেও বেশ খ্যাতি লাভ করেছিলেন। কারণ নির্বাচনের সময় দেশের সকল ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার হেডলাইন জুড়ে তার নামের চেয়ে ভাগিনা বিশেষণটিই সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়েছিল। নির্বাচনে অংশগ্রহণ পরবর্তীতে বিজয় সব বিষয় নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন থাকলেও মূলত এই এস এম শাহজাদা সাজু  নিতান্ত ভদ্র এবং সাদাসিধে মনের একজন ধার্মিক মানুষ। নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ গ্রহণের পর থেকে সাধারণ জনগণের প্রতি তার দায়িত্বশীল আচরণ এবং কাজকর্ম বেশ প্রশংসনীয় একইসাথে ঈর্ষনীয়ও বলা চলে। দশমিনা গলাচিপার প্রতিটি হাট–বাজার–গ্রাম–গঞ্জ–লোকালয়ের সবুজ স্নাত নির্মল প্রকৃতির প্রতি ধ্যান–জ্ঞানের দিক বিবেচনায় শাহজাদা সাজু যোগ্য ও মেধাবী জনপ্রতিনিধিদের একজন এবিষয়ে কোন দ্বিমত নেই। তার দুচোখ জুড়ে খেলা করে বেড়ায় হিম্মত আর অবিনাশী চেতনার গান।

আমার নিবন্ধে উল্লিখিত ব্যক্তিটি আমার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী–৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা সাজু। একই এলাকার সন্তান এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে আমি তাকে সাজু ভাই বলেই সম্বোধন করে থাকি। সাজু ভাইয়ের সাথে আমার যোগাযোগ ঘনীভূত হয় গত দুমাস ধরে। আমার লেখা বেশ কয়েকটি ইংরেজি সম্পাদকীয় কলাম আমি প্রায় সময়ই তাকে পাঠাতাম। আবার ফোন করে কুশলাদি বিনিময় কালে আমার সাথে তার বাচনভঙ্গি শব্দচয়ণ  এবং আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ সবকিছু মিলিয়ে তিনি যে একজন ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার রাজনীতিক ও উদার মনের মানুষ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার ব্যক্তিগত জানাশোনায় যতদুর বুঝতে পেরেছিলাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর থেকে পটুয়াখালী–৩ আসনের অবহেলিত ঐতিহাসিক প্রত্যন্ত এই অঞ্চলটির বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন এবং জনসাধারণের কল্যাণে তিনি সপ্তাহের বেশিরভাগ সময়ই নিজ এলাকায় ছুটে যান এবং উন্নয়ন প্রকল্পের নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করতে ঘুরে বেড়ান।

সর্বশেষ গত মাসে তার বরাদ্দকৃত সরকারি বাসভবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎ করার কথা থাকলেও দুজনেরই নানামুখী ব্যস্ততার কারণে আর যাওয়া হয়ে ওঠে নি। তবে গত ১৫ই জুন আমি যখন তার সাথে কথা বলেছিলাম অত্যন্ত বিনয়ের সাথে জানিয়ে ছিলেন নিবির! আগামীকাল বাজেট সম্পর্কে সংসদে অধিবেশন আছে যে। আমি তখনও অনুমান করতে পারিনি পরদিন দুপুরেই তিনি জাতির জন্য এত সুন্দর একটি নজির জাতীয় সংসদে স্থাপন করতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সাংসদ বিভিন্নভাবে জনগণের দুঃখ– দূর্দশা ও নীতিসঙ্গত যৌক্তিক দাবি নিয়ে জাতীয় সংসদে নিজ অবস্থান তুলে ধরলেও একেবারে জনগণের ভাষায় জনগণের বেশে এভাবে হয়ত শাহজাদা সাজুই প্রথম এবং অনন্য।

আমার এখনও মনে পরে এস এম শাহজাদা সাজু নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তির পূর্বক্ষণে সেদিন বলেছিলেন,— “আমি ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এখানকার মানুষ তরুণ প্রজন্মকে চায়।” অত্যন্ত সাহসীকতা আর আত্মবিশ্বাসের সাথে কথাটি বলে ফেললেও সার্বক্ষণিক তিনি যে চেষ্টা করে চলছেন জনসাধারণের কাছে তরুণ প্রজন্মের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে তা তার নির্বাচনী এলাকার মানুষদের সাথে কথা বললে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এস এম শাহজাদা সাজু যেদিন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজ এলাকার মানুষের মনের কথা তুলে ধরতে নিজ আসনে ‘আর কোনো দাবি নাই, ত্রাণ চাই না বাঁধ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রীর দিকে অসহায় মায়াবী দৃষ্টিতে ক্ষীণসকরুণ কন্ঠে স্পীকারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সেদিন তার এ-কান্ডে মুগ্ধ হয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীসহ সমগ্র বাংলাদেশের জনগণ ।

পটুয়াখালী–৩ আসনটি বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময়ী অঞ্চল হলেও এই জেলায় নদী ভাঙনের প্রবণতা খুবই বেশি। এ জেলার অন্তর্গত লোহালিয়া ও পায়রা নদীর ভাঙনের ফলে দুমকি উপজেলার ভূমির আয়তন কমে এসেছে। আবার পটুয়াখালী জেলার পূর্বদিক থেকে বয়ে যাওয়া তেতুলিয়া নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যেই পানপট্টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা গ্রাস করে ফেলেছে এবং বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন এবং হাট বাজার বিলীন হয়ে গিয়েছে। এতে গলাচিপা উপজেলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরেছে একইসাথে কলাপাড়া, গলাচিপা, দুমকী উপজেলায় টেকসই বাঁধের অভাবে জনসাধারণ ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি আর মুসিবতের স্বীকার হয়ে পড়ছে।

বছর বছর অতি বৃষ্টির ফলে নদী নালার পানি বেড়ে গিয়ে পটুয়াখালীতে বন্যার সৃষ্টি করে যা স্থানীয় জনজীবনে দুর্ভোগ ও অস্তিত্ব-সংকট তৈরি করে শতশত পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে দেয়। ফলশ্রুতিতে ফসল ও পশুপাখি তথা কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে যা শুধুমাত্র সামান্য কিছু ত্রাণ কিংবা ক্ষতিপূরণ দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। এধরণের সমস্যায় প্রয়োজন টেকসই বাঁধ নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গৃহীত করা। আর এই বিষয়টি সাধারণভাবে সংসদে উপস্থাপন করলে যে গুরুত্ব পাবে না অথবা সংশ্লিষ্টজনদের কর্ণকুহরে আওয়াজ তুলবে না সেটি হয়তো স্পষ্ট বুঝতে পেরেই মূলত শাহজাদা সাজুর বিকল্পধারার এই উপস্থাপন কৌশল যা তার মেধা ও মননের উৎকর্ষ উদাহরণ বহন করেছে। তবে সেদিনকার সেই অধিবেশনে প্রধাণমন্ত্রীর মুগ্ধ দৃষ্টি আর হাত তালির দৃশ্য এবং বিগত দিনগুলোতে তরুণ প্রজন্মের  বিভিন্ন শুভকাজ– বুদ্ধিমত্তা– বিকল্পধারার কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন বিচার বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যায় তিনি অবশ্যই তরুণ প্রজন্মের যেকোনো যৌক্তিক দাবির প্রতি অনুভূতিশীল।

বিগত দিনগুলোতে বাংলাদেশে তরুণদের সকল কার্যক্রম এবং অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর অতি আগ্রহ আর উদ্দীপনা দেখে একটি বিষয় অনেকাংশে নিশ্চিতভাবে বলা চলে তিনি (দেশরত্ন শেখ হাসিনা) তরুণদের যেকোনো বিজয়ে নিজের বিজয় খুঁজে পান। ছাত্রাবস্থায় রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সম্মুখ প্রান্তে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নেতাকর্মীদের যে সমর্থন তিনি অর্জন করেছিলেন বর্তমান সময়ে এসে তার লেশ বিন্দুমাত্র বিলোপ পায়নি। তিনি বিভিন্ন সময়ে ক্রিকেট খেলার মাঠে চলে যান। কখনও কখনও ক্রিকেটারদের স্বপরিবারে গণভবনে আমন্ত্রণ করে খাওয়ান। কখনও আবার নিজ হাতে রান্না করে তাদেরকে পাঠিয়ে দেন। যখনই কোনও তরুণদের ভালো কাজ দেখতে পান অনায়াসে তার মূল্যায়ন করতে থাকেন। যার দরুণ গত নির্বাচনে একঝাঁক তরুণদের যখন প্রাধান্য দেয়া হয়। এবং মন্ত্রণালয়ে আমুল পরিবর্তন আনা হয় তখন অনেকেই বুঝতে সক্ষম হয়নি কেনো কি কারণে এ পরিবর্তন সেদিন আনা হয়েছিলো।

একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি দেশের জনগণ হলেও একটি দেশের প্রাণ সে দেশের তরুণ সমাজ। তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই আগামীর বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবে। যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনুধাবন করতে পেরেই প্রতিনিয়ত তরুণদের খোঁজ করতে থাকেন। শুধু রাজনীতিবিদ কিংবা খেলোয়াড়ই নয় অভিনয় জগতেও তরুণদেরই খোঁজ করে কাছে টেনে নেন তিনি। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক সফর কিংবা সমাবেশ–সম্মেলনে অভিনেতা–শিল্পী–ছাত্রনেতাদের সঙ্গি হিসেবে সঙ্গে নেয়া থেকে শুরু করে সর্বশেষ মাশরাফিকে তুই বলে ঘনিষ্ঠভাবে সম্বোধন করা সবই যেনো বিশেষভাবে প্রশংসার দাবি রাখে। তবে ভাগ্নে শাহজাদা সাজুর এই বিকল্পধারার উপস্থাপনায় কতটুকু প্রশংসা জোটাবে প্রধানমন্ত্রীকে তা আগামী নির্বাচনে জনগণের জবাবের মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে বলে আশা রেখে আজকের নিবন্ধের ইতি টেনে বিদায় নিলাম।

লেখকঃ রাজনীতিক ও কলামিস্ট। 

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..