1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

সংসদে আজ পেশ: যা থাকছে এবারের বাজেটে

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০
  • ১৭৩ Time View
সংসদে আজ পেশ: যা থাকছে এবারের বাজেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইতিহাসের বড় দুঃসময়ে মানবজাতি। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত। পাল্টে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির সব হিসাব-নিকাশও। একদিকে জীবন রক্ষার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। অন্যদিকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লড়াই। করোনাকালে টিকে থাকার পরীক্ষা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সামনে। ইতিহাসের নজিরবিহীন এই সংকট মোকাবিলায় কী সুখবর দেবেন অর্থমন্ত্রী, তা জানতে আজ সবার চোখ থাকবে সংসদের দিকে। আজ আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী।

দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তির চেয়ে এখন অস্বস্তিই বেশি। একমাত্র বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়া বাকি সব সূচকই নিম্নমুখী। আয় কম। ব্যয় বেশি। ব্যাংক থেকে ধার বেড়েছে। কঠিন চাপে অর্থনীতি। অর্থমন্ত্রীর সামনে বড় ঝুঁকি, আছে চ্যালেঞ্জও। পরিস্থিতির কারণে এবার হয়তো উন্নয়নের চাপ কম এসেছে সারাদেশের জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে। কিন্তু করোনা-পরবর্তী স্বাস্থ্য, খাদ্য ও সামাজিক সুরক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বেড়ে গেছে। তার সঙ্গে রয়েছে বেতন-ভাতা, ভর্তুকিসহ অন্যান্য সাধারণ ব্যয়; কিন্তু বাড়েনি আয়। আবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর সুযোগ সীমিত। ফলে বাড়তি অর্থ জোগানে বিশাল চাপ আছে অর্থমন্ত্রীর ওপর।

এমন এক কঠিন বাস্তবতায় মহাসংকটের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট আসছে। বর্তমান সরকারের আমলে এটি হবে মুস্তফা কামালের দ্বিতীয় বাজেট।অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কী ধরনের বাজেট ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন, করোনাভাইরাস কিভাবে মোকাবেলা করা হবে, ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাতই বা উদ্ধারের পরিকল্পনা কী, তা জানতে সবার চোখ থাকবে বাজেটে। সাধারণ মানুষ জানতে চায় আর কত দিন বেকার থাকতে হবে? সরকার তাদের জন্য বাজেটে কী রাখছে? মধ্যবিত্তরা আবার সঞ্চয় করতে পারবে কি না, তা জানতে চায়। ব্যবসায়ীরা জানতে চান তাঁদের কোনো প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে কি না। বাজেটে তাঁদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে কি না। এসব আকাঙ্ক্ষা পূরণের চাপ নিয়ে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামের দেশের ৪৯তম বাজেট ঘোষণা করবেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তাঁর দ্বিতীয় বাজেট।

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সবচেয়ে কমসংখ্যক সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে বাজেট ঘোষণা করা হবে। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে একটি করে আসন ফাঁকা রেখে আসনবিন্যাস করা হয়েছে। বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন না কোনো সাংবাদিক কিংবা বিশিষ্টজন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম জানান, অর্থমন্ত্রী আজ দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনে যাবেন। দুপুরেই মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হবে। সংসদ নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে সীমিত সংখ্যক মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রতিবারের মতো এবারও হবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন। তবে এবার সরাসরি নয়, অর্থমন্ত্রী তাঁর পরিকল্পনা কমিশনের কার্যালয় থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বাজেট সম্পর্কিত বক্তব্য তুলে ধরবেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এবারের বাজেটে সংগত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা এবং কর্মসংস্থানকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে নানা ধরনের কৃষি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা সম্প্রসারণ, ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরুদ্ধারসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাজেটে বিভিন্ন প্রস্তাব থাকছে।

বাজেটে ব্যয় আয় : আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটের আকার ৪৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বাড়ছে। আগামী বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর অনুদান ব্যতীত রাজস্ব আয় তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। সে হিসাবে রাজস্ব আয় বাড়ছে ১৯০ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের বাজেটে করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার তিন কোটি টাকা। আগামী বছরে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে চার হাজার ১৩ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটে অনুদান ব্যতীত ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, জিডিপির ৫ শতাংশ। সে হিসাবে আগামী অর্থবছরে অনুদান ব্যতীত ঘাটতি ৪৪ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা বাড়ছে।

ভ্যাটে সংস্কার : মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটে আগাম কর শিল্পের কাঁচামালের জন্য ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য আগের মতো ৫ শতাংশই বহাল থাকছে। বর্তমানে নতুন বা পুরোনো রিম সংযোজনে নির্ধারিত ২০০ টাকা কর নেওয়া হয়, যা মোবাইল অপারেটর দিয়ে থাকে। জানা যায়, নতুন বাজেটে এই কর বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে যারা সার্জিক্যাল মাস্ক ও পিপিই তৈরি করবে তাদের ভ্যাট মওকুফ করা হচ্ছে।

মধ্যম ও নিম্ন স্তরের সিগারেটের মূল্য স্তর গড়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ছে। ব্যাংকে যাদের পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত আছে তাদের ওপর আবগারি শুল্ক্ক বর্তমানের চেয়ে ১৫ শতাংশ বাড়ছে। সূত্র জানায়, নতুন বাজেটে ভ্যাটের আওতা তেমন বাড়ছে না। তবে উৎসে কর রেয়াতসহ অন্যান্য খাতে যেসব অসঙ্গতি আছে সেগুলো দূর করে সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সর্বাধিক গুরুত্ব স্বাস্থ্য কৃষিতে : করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ খাতের জন্য আসছে মেগা পরিকল্পনা। এর মধ্যে থাকবে তিন বছরের মধ্যম এবং ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আর এ দুই মেয়াদে দেশের চিকিৎসা খাতে আনা হবে আমূল পরিবর্তন ও সংস্কার, যাতে করোনাভাইরাস-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থা থাকবে। স্বাস্থ্য খাতে মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার মধ্যে থাকছে জনবল নিয়োগ। এ ছাড়া উন্নত বিশ্ব থেকে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক এনে দেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। নতুন হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি জেলায় গড়ে তোলা হবে গবেষণাগার। কেনা হবে মেডিক্যাল সরঞ্জাম। এ জন্য বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই কৃষি খাত টিকিয়ে রাখতে আসছে বাজেটে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে শিক্ষা খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাজেটে আগামী বছর শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে পরিচালনা ও উন্নয়ন উভয় খাতে সরকার ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে।

করোনার কারণে সবেচেয়ে বেশি ভুগছে গরিব মানুষ। তাই বাড়ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আয়তন ও বরাদ্দ। নতুন বাজেটে এ খাতে ব্যয় করা হবে ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক, বিধবাসহ মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৮১ লাখ। আসছে অর্থবছরে এ সংখ্যা ৯২ লাখ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে নতুন বাজেটে।

করোনা মোকাবেলায় বিশেষ বরাদ্দ : আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে করোনাভাইরাস মোকাবেলা এবং অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকে কেন্দ্র করে। তাই বাজেটে করোনা মোকাবেলায় থাকছে ১৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হচ্ছে সরাসরি করোনা মোকাবেলায় খরচের জন্য। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানার জন্য সরকার ঘোষিত প্যাকেজের সুদ খাতে খরচ বাবদ রাখা হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। আর দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বাংলাদেশ পাটকল সংস্থার (বিজেএমসি) শ্রমিকদের জন্য।

নতুন আয়ের উৎস : করোনাকালে মানুষ অনলাইনের দিকে ঝুঁকছে। অনলাইনে করছে কেনাকাটাসহ যাবতীয় কাজ। চালডাল, ইভ্যালি, দারাজ, পাঠাওসহ বিভিন্ন অনলাইননির্ভর ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা এখন তুঙ্গে। বর্তমানে এসব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পণ্য কেনাকাটা করলে কোনো ভ্যাট দিতে হয় না। আগামী অর্থবছরে অনলাইনে ব্যবসার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হতে পারে। এ ছাড়া কিছু বিলাসপণ্যে কর বাড়ানো হতে পারে। বাড়তে পারে গাড়ি নিবন্ধনের ফি।

কর রেয়াত যেসব খাতে : করোনা সম্পর্কিত চিকিৎসাসামগ্রীর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর আমদানিতে থাকবে কর রেয়াত। এ ক্ষেত্রে অগ্রিম কর অব্যাহতির ঘোষণা থাকতে পারে বাজেটে। পাশাপাশি দেশে করোনাভাইরাসে সুরক্ষা দেয় এমন সামগ্রী তৈরি করলে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে।

রপ্তানিতে প্রণোদনা : করোনা পরিস্থিতিতে রপ্তানি খাতে বিশাল ধাক্কা লেগেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের অবস্থা খারাপ। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। এটিকে বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা হতে পারে। আগামী বাজেটে ওষুধ খাতেও রপ্তানি প্রণোদনা বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে ওষুধ খাত ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা পায়। আগামী বাজেটে এটি বাড়িয়ে ১১-১২ শতাংশ করা হতে পারে। মেডিক্যাল ও অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ওষুধ খাতের মতোই প্রণোদনা পাবে। এ ছাড়া প্রণোদনা পাওয়া পণ্যের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..