বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:
করোনার সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই আর সরকারি অফিসে আসতে হবে না। কর্মীদের এমনই নির্দেশ দিল নবান্ন। সরকারের নয়া নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সামান্য সর্দি–কাশি থাকলে অফিসে না এসে বাড়িতে থেকেই কাজ করতে হবে কর্মীদের। এমনকী, কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দা সরকারি কর্মীদেরও বাড়িতে বসেই কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তবে সরকারি কর্মীদের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, অফিসে যদি বা সমস্ত নিয়ম মেনে চলা যায়, কিন্তু অফিসে আসার সময় বাসে বা অটোয় সেই নিয়ম মেনে অফিসে আসা যাবে তো?
উল্লেখ্য, সোমবার থেকেই রাজ্য সরকারের অফিসে উপস্থিতির হার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ৭০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকছেন দফতরগুলিতে। কিন্তু দফতরগুলিতে এত কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এই ঘটনা নিয়ে আলাপ–আলোচনা শুরু হতেই সরকারি আধিকারিকরা নড়েচড়ে বসেন। খবর যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। তাঁর সম্মতি নিয়ে জারি হয়ে নতুন নির্দেশিকা। জানা গিয়েছে, এখন সরকারি অফিসে কর্মীদের প্রবেশের আগেই হাত স্যানিটাইজ করে নিতে হচ্ছে। এমনকী, শরীরের তাপমাত্রাও থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে। এই সময়েই সরকারি কর্তাদের নজরে আসে, ছুটি কাটা যাওয়ার ভয়ে অনেক কর্মী নাকি জ্বর বা সর্দি–কাশি নিয়েই অফিসে আসছেন। তখনই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে অনেক ভাবনাচিন্তার পর রাজ্য সরকারের তরফে মঙ্গলবার নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সর্দি–কাশি বা গলাব্যথা হলে অফিসে আসতে হবে না। কনটেনমেন্ট এ এবং বি জোনের বাসিন্দা কর্মীদেরও বাড়িতে বসে কাজ করতে হবে। অফিসগুলিতে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি বসে কাজ করতে পারবেন না। অফিসে পৌঁছে লিফটে একসঙ্গে তিনজনের বেশি ওঠা যাবে না। সমস্ত সরকারি কর্মীকে প্রতিদিন অফিস আসতে হবে না। একদিন অন্তর অফিস এলেই হবে। তবে যে কর্মীদের পদমর্যাদা ডেপুটি সেক্রেটারি বা তারও উঁচু, তাঁদের যদি নিজস্ব কেবিন থাকে, তা হলে সেই কর্মীদের প্রতিদিন অফিস আসতে হবে। অফিসের মধ্যে মুখোমুখি বসে বৈঠক করা যাবে না। ইন্টারকম, টেলিফোন বা ভিডি কনফারেন্সিংয়ে কাজ সারতে হবে। অফিসের মধ্যেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। কেউ মাস্ক না পরলে কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন। যে দফতরগুলিতে সাধারণ মানুষের যাতায়াত থাকবে, সেখানকার কর্মীদের মানুষের সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলতে হবে।
কেউ কেউ ভিন্ন কথা বললেও সরকারের এই নির্দেশিকায় অনেক কর্মীই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে সরকারি কর্মীরা অনেকটাই নিরাপদে থাকতে পারবেন।