বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:
আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ লক্ষ মানুষের জন্য ৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমফানে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, দ্রুত তাঁদের বাড়িঘর মেরামত করে দেওয়া হবে। তাই তাঁদের জন্য খরচ করা হবে ৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে গৃহনির্মাণের জন্য সরাসরি ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া একশো দিনের কাজের মাধ্যমে মজুরি বাবদ আরও ২৮ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য।’ তিনি জানান, প্রথমে পাঁচ লক্ষ পরিবারকে এবং পরে আরও পাঁচ লক্ষ পরিবারকে টাকা দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী টাকা কী ভাবে খরচ হবে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে খরচ করা হবে মোট ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ৮০০ কোটি এবং জয় বাংলা প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক করতে ৫০০ কোটি, রাস্তা মেরামতিতে ১০০ কোটি, হাঁস–মুরগির খামারের জন্য ১০০ কোটি, নদীর বাঁধ তৈরিতে ২০০ কোটি, স্কুলবাড়ি মেরামতে ১০০ কোটি, পানের বরজ মেরামতিতে ২০০ কোটি, মৎস্যচাষিদের জন্য ১০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি। তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যে কমপক্ষে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা শুধু যোগ–বিয়োগের খেলা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মনে রাখা উচিত, একশো দিনের টাকা পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। তা হলে এ ক্ষেত্রে তা কী করে রাজ্য সরকার দিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন? এই কাজের টাকা যেখানে আমফানে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হননি, সেখানকার মানুষও পাবেন। তা হলে কী করে সেই টাকা আমফানের প্যাকেজে ধরা হয়? মুখ্যমন্ত্রী যা বলছেন, আর রাজ্য সরকার যে হিসেব দিচ্ছে, তা মিলছে না। আসলে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলতে ভালবাসেন। তাই কথা বলতে গিয়ে তিনি অবলীলায় মিথ্যের ফুলঝুরি ছড়িয়ে যাচ্ছেন।’
এদিকে, শুক্রবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি–বেসরকারি সংস্থা খোলার ব্যাপারে যে কথা বলেছিলেন, রাতে সেই বক্তব্যের সংশোধন করেন। তিনি বলেন, ‘৮ জুন থেকে সরকারি সংস্থাগুলিতে ৭০ শতাংশ মানুষ কাজে যোগ দেবেন। বেসরকারি সংস্থায় কত মানুষ কাজে যোগ দেবেন, তা ঠিক করবে ওই সংস্থাই।’ এদিন বিকেলে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিতে একশো শতাংশ কর্মীর উপস্থিতির কথা ঘোষণার পরই বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। সেইজন্যই মুখ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্য থেকে সরে এলেন বলে অনেকে মনে করছেন।