দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় ফেল করায় ৪ জেলায় ৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ফল প্রকাশ হওয়ার পর বিষপান ও গলায় ফাঁস দিয়ে তারা আত্মহত্যা করে।
রোববার সারাদেশে এসএসসির ফল প্রকাশ করা হয়। এরপরেই লালমনিরহাট, ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে ফেল করায় লাইজু আক্তার নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বিষপান করে আত্নহত্যা করেছে সে। লাইজু আক্তার ওই এলাকার জেল হকের মেয়ে ও পারুলিয়া তফসীল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। ফলাফলে লাইজু আক্তার ফেল করে। খবর পেয়ে সে বিষপান করে। পরে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে তার মৃত্যু ঘটে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে অকৃতকার্য হওয়ায় খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিয়ারুল নামক এক ছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পিয়ারুল উপজেলার সাহাবাজপুর গ্রামের ঝন্টু মিয়ার ছেলে। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় সকলের অগোচরে মাঠে একটি গাছের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
মহেশপুর থানার ওসি মোর্শেদ হোসেন খাঁন জানান, খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তার এই করুণ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় ফেল করায় মণি আক্তার (১৮) নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। রোববার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আত্মঘাতী মণি আক্তার উপজেলার বেগুনাই গ্রামের জামাল মিয়ার মেয়ে। সে মাদনা এসইএসডি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ফলাফল পাওয়ার পর সে ফেল করায় রাগে ও অপমানে পরিবারের সকলের অগোচরে বিষপান করে।
বিষয়টি পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মণিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে লিমা আক্তার (১৬) নামক এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে এবং আরেকজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
আত্মঘাতী লিমা আক্তার হরিপুর ইউনিয়নের তিনুয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে। সে হরিপুর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
পরিবারের বরাত দিয়ে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মংলা বলেন, রোববার সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। এসএসসি পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে ফলাফল খারাপ করায় এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি লিমা আক্তার। এ কারণে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
লিমার বাবা জহিরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে আমি ও আমার স্ত্রী মাঠে ধান কাটছিলাম। দুপুরে বাড়িতে এসে দেখি মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরিবারের অন্যরা মিলে লিমাকে উদ্ধার করে হরিপুর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কবিরুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে আত্মহত্যার চেষ্টা করা শিক্ষার্থী বিউটি আক্তার (১৬) হরিপুর ইউনিয়নের বালিহাড়া গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে। মশানগাঁও দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।
বিউটির বাবা বেলাল হোসেন বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় পরিবারের সকলের অগচরে ঘরের ভেতর কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে তার চিকিৎসা চলছে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন