ওয়েব ডেস্ক: দেশের ৪৯টি জেলার ওপর দিয়ে আগামী আট দিনে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে জানিয়ে কৃষি ও মাঠ ফসলের সুরক্ষায় বেশ কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের ৪৯টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ১০ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। এসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিচের পরামর্শগুলো দিচ্ছে।
জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. শাহ কামাল খান বলেন, কিছুদিন পর বোরো ধান কাটা শুরু হবে। কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এতে শেষ মুহূর্তে ধানের যেকোনো ক্ষতি হতে পারে। পানির প্রয়োজন হতে পারে। তাই কৃষকদের পানি ধরে রাখার জন্য অনুরোধ করেছি।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে বোরো ধান মাঠে রয়েছে। ধানে ফুল রয়েছে। কিছু কিছু দুগ্ধ আর কিছু কিছু ক্ষীর অবস্থায় আছে। বর্তমানে পোকামাকড় ও রোগবালাই তেমন না থাকলেও তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। তাপমাত্রা যদি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে চলে যায় সেক্ষেত্রে ধান চিটা ধরে। সেজন্য কৃষকদের করণীয় হলো, ধানে ফুল অবস্থায় পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া তাপমাত্রার আধিক্য, এ কারণে ধানগাছের গোড়ায় সবসময় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হবে। ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে। তাহলে আশা করা যায় যে তাপপ্রবাহে ধানের ফলনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
এছাড়াও রাজশাহী, চাঁপানবাবগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলায় এখন আম ও লিচুসহ অন্য ফলে গুটি রয়েছে। তা ঝরে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ফলচাষিদের গাছের চারদিকে রিং করে পানি সেচ দেওয়া এবং তা অবশ্যই বিকেলে দিতে হবে। কারণ, সকালে সেচ দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে দুপুরের রোদে কিছু পানি বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। তাই অবশ্যই পানি বিকেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে-
*তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা : ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে।
*আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করা, প্রয়োজনে গাছের শাখাপ্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে।
*সবজির জমিতে আগামী এক সপ্তাহে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ২ থেকে ৩টি সেচের ব্যবস্থা করা।
*ফল ও সবজির চারা তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মালচিং ও সেচ নিশ্চিত করা।
যেসব জেলার জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে– বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মৌলভীবাজার।