নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েক দিনের চলমান টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পানির ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবকটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে।
রবিবার (৬ আগষ্ট) কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট দিয়ে ১৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, রবিবার (৬ আগষ্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে মোট ১৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। যার মধ্যে কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটে ৩৩ মেগাওয়াট, ২ নম্বর ইউনিটে ৩২ মেগাওয়াট, ৩ নম্বর ইউনিটে ২৪ মেগাওয়াট এবং ৪ নম্বর ইউনিটে ২২ মেগাওয়াট এবং ৫নং ইউনিটে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। এছাড়া পানি পরিমাণ আরো বাড়লে সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।
এদিকে কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)।রোববার সকাল থেকে ১৬টি স্পিলওয়ে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দিয়ে সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেফ অতিরিক্ত পানি অপসারণ করা হচ্ছে। হ্রদে বর্তমানে ৯০.৬০ এমএসএল পানি থাকার কথা থাকলেও রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৮২.৮৩ এমএসএল পানি রয়েছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী, মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারনে কর্ণফুলি পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চালু হয়েছে এবং উৎপাদন অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধীরে ধীরে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন পূর্বেও কাপ্তাই হ্রদে হ্রদে পানি স্বল্পতায় ২৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্রে দৈনিক মাত্র ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। তবে গত কয়েকদিনে টানা বর্ষণে হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে গেছে।
কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ির ঢলের কারনে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই বন্ধ হওয়া কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারটি ইউনিটসহ সর্বমোট পাঁচটি ইউনিট চালু করেছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ইতোমধ্যে একসঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবকয়টি ইউনিট সচল হয়েছে নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের। তিনি জানান, হ্রদের পানি বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়বে। তবে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৯০.৬০ফুট মীনস সী লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু হ্রদে পানি আছে ৮২.৯০ ফুট (এমএসএল)। কাপ্তাই হ্রদে পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল।
প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের সবকয়টি সচল রয়েছে। এখান থেকে বর্তমানে ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
গত কয়েকদিন আগেও পানির অভাবে সচল থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে চারটি বন্ধ ছিল। তখন একটি ইউনিটে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। #