বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:বাংলার রাজনীতিতে দু’জনের অবস্থান দুই মেরুতে। সেই দু’জনেরই ফোনালাপ একটু অন্য রকম করে দেয় সোমবার বিকেলকে। একজন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, অন্যজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই এতদিন পরস্পরের সমালোচনা করে এসেছেন। তবে এবার ফোনের তাৎপর্য অন্য রকম।
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অবশেষে বুধবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দল তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক হবে নবান্নের সভাঘরে। বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য কংগ্রেস, সিপিএম–সহ রাজ্যের প্রায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সোমবার বিকেলে দিলীপ ঘোষকে সেই আমন্ত্রণই জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তাঁর ফোন পেয়ে রীতিমতো বিস্মিত হন দিলীপ ঘোষ। তার পর মোবাইলের সবুজ বোতাম টিপতেই অন্যদিক থেকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর কথায় সায় দিতে পারেননি দিলীপবাবু। তিনি জানান, বুধবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে তিনি মেদিনীপুরে থাকবেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সেই কর্মসূচি বাতিল করে দিয়ে বৈঠকে আসতে বলেন।
এর পর দিলীপবাবু আর অরাজি হতে পারেননি। নির্দিষ্ট কর্মসূচি বাতিল করে দিয়ে তিনি বৈঠক যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে সে কথা তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েও দেন। তবে এর পরও তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়েননি। জানান, প্রধানমন্ত্রী করোনা নিয়ে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি সর্বদলীয় বৈঠকও ডেকেছেন। সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন চিন–ভারত সঙ্ঘর্ষ নিয়েও। এমনকী, আমফান নিয়েও এই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যে এসেছেনও। কিন্তু এই রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের বহু অভিযোগ থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক দূরের কথা, কোনও বিরোধী নেতার সঙ্গে কথাই বলেননি।
বুধবার বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। কিন্তু অধ্যক্ষ জানান, এখন করোনা পরিস্থিতিতে পরস্পরের সঙ্গে সমাজিক দূরত্ব রাখাই নিয়ম। এই অবস্থায় রাজ্যে বিরোধী দলের নেতাদের একসঙ্গে বসতে দেওয়ার জায়গা হবে না তাঁর ঘরে। তাই বৈঠকটি যাতে নবান্নের সভাঘরে হয়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই অনুরোধ জানান তিনি। অধ্যক্ষের যুক্তি মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরই সিদ্ধান্ত হয় বুধবার নবান্নের সভাঘরেই হবে রাজ্যের সর্বদলীয় বৈঠক।