বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:টিকটক তো বন্ধ হয়ে গেল। এখন মিমি চক্রবর্তী বা নুসরত জাহানকে কী করে দেখা যাবে? এই প্রশ্ন টালিগঞ্জের অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের। তবে তাঁদের নাম করেননি তিনি। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শুধু লিখেছেন, ‘টিকটক তো বন্ধ। যাদবপুর এবং বসিরহাটের মানুষ এবার তাঁদের সাংসদদের কোথায় দেখতে পাবেন?’ শুধু তাই নয়, রীতিমতো কটাক্ষ করে এ কথাও লিখেছেন, ‘আমার চোখে জল এসে যাচ্ছে।’
টিকটক–সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপকে ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সোমবার রাতে। মঙ্গলবার থেকেই গুগল প্লে স্টোর থেকে একে একে উধাও হয়ে যাচ্ছে অ্যাপগুলি। যদি বা পাওয়া যাচ্ছে, তো সেই অ্যাপগুলি আর কাজ করছে না বলে অনেকেই জানিয়েছেন। সে বিষয়েই মঙ্গলবার মুখ খোলেন শ্রীলেখা। এর আগে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে মুম্বইয়ের হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। কলকাতার টালিগঞ্জে সেই রীতি নিয়ে আসেন শ্রীলেখা। টালিগঞ্জেও যে স্বজনপোষণ হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর নিশানায় ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় থেকে আরও অনেকে। নাম না করে স্বস্তিকা পাল্টা তোপ দেগেছিলেন শ্রীলেখার বিরুদ্ধেও।
তবে শ্রীলেখার মন্তব্যের পরই বিষয়টি নিয়ে একে একে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, টোটা রায়চৌধুরী, পার্ণো মিত্র–সহ অনেক অভিনেতা–অভিনেত্রীই মুখ খুলতে শুরু করেন। এর পর মঙ্গলবার নিষিদ্ধ চিনা অ্যাপ টিকটককে ইস্যু করে দিলেন শ্রীলেখা। যদিও তাঁর মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া এখনও অভিনেত্রী তথা যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী বা বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান দেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে এদিন রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে যায় চলচ্চিত্র থেকে রাজনৈতিক মহলেও।
১৫ জুন গালোয়ানে চিন সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার প্রতিবাদে সারা ভারতেই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছিল। সেই দাবি এখনও নানা ভাবে সাধারণ মানুষ জানিয়ে চলেছেন। তখনই অনেকে ভারতে চিনের পণ্যবর্জনের ডাক দেন। একই সঙ্গে চিনা পণ্যসামগ্রী নিষিদ্ধ করারও দাবি ওঠে বিভিন্ন মহলে। এমনকী, সর্বদলীয় বৈঠকে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চিনের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এতিদন সরকারের তরফে সে ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
কিন্তু সোমবার রাতে আচমকাই ভারত সরকার ৫৯টি চিনা অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক জানিয়েছে, চিনের এই অ্যাপগুলি দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। তাই তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারায় অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে ভারতীদের ব্যক্তিগত তথ্য চিনের হাতে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে অনেক অভিযোগ এসেছিল ভারত সরকারের কাছে। সেইজন্যই এই কড়া পদক্ষেপের কথা ভাবে দিল্লি।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানায়, তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। যদিও সরকারের এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানান, শুধু অ্যাপ ব্যান করে লাভ হবে না। আরও কড়া জবাব দিতে হবে চিনকে।