1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

রাজধানী ঢাকায় সঙ্কটে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া

  • Update Time : শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০
  • ২১০ Time View
রাজধানী ঢাকায় সঙ্কটে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া

প্রত্যয় ডেস্ক : ঢাকার দুটি এলাকায় মেস করে থাকা বেশ কয়েকজন ছাত্রের ভাড়া বকেয়া থাকায় বাড়ির মালিক সম্প্রতি তাদের মালপত্র নষ্ট করেছেন এবং অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মামলা এবং গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। বৃহস্পতিবার থেকে বেশ আলোচিত এই ইস্যুটি নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে বাংলাদেশে বাড়িভাড়া নিয়ে সঙ্কটকে।

কেননা এই ভাড়াটিয়ারা যেমন চাপের মুখে থাকেন, তেমনি বাংলাদেশের অনেক বাড়ির মালিকের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বাড়িভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে। করোনাভাইরাসের এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে এই সঙ্কট কাটাতে অর্থনীতির চাকা সচল করার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতে সঙ্কট সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কেউ যেন কারও প্রতি অমানবিক না হয়। যেমনটি হয়েছে ঢাকার ওই ছাত্রদের সঙ্গে।

ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাটে গত চার বছর ধরে ভাড়া থাকত নয়জন শিক্ষার্থী। গত ২০ মার্চ তারা ঘরে তালা দিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। এর পরপরই লকডাউন শুরু হওয়ায় কেউ ঢাকায় ফিরতে পারেনি। যে কারণে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসের ভাড়া মোট ৭৫ হাজার টাকা জমা পড়ে। শিক্ষার্থীদের দাবি, এর মধ্যে বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস বিল বাবদ কিছু টাকা তারা পরিশোধ করেছে বাকিটা শিগগিরই দেওয়া হবে বলেও তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু পরে স্থানীয় লোকজনের কাছে তারা জানতে পারে যে, বাড়ি মালিক তাদের সব মালপত্র ফেলে দিয়েছেন।

কোনো নোটিস ছাড়াই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভাড়া থাকা ওই শিক্ষার্থীরা। ‘আমাদের এত বছরের সব অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট, কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের সার্টিফিকেট, জরুরি আরও অনেক কাগজপত্র কিচ্ছু নেই। আমাদের এখানে এইচএসসি পরীক্ষার্থী থাকে। তার রেজিস্ট্রেশন পেপারটাও এখন নেই। ও পরীক্ষার হলে ঢুকবে কীভাবে? চার বছরের অনেক ছোট ছোট স্বপ্ন ছিল, সব উনি নষ্ট করে দিলেন।’ আক্ষেপ করে বললেন সজীব। এ ঘটনায় বাড়িওয়ালা মুজিবুর হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি।

প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়ও। সেখানেও একটি মেসবাড়ির ১৩০ জন শিক্ষার্থীর দুই মাসের ভাড়া বকেয়া থাকায় বাড়িওয়ালা কোনো নোটিস ছাড়াই তাদের সব মালপত্র গ্যারেজে ফেলে দেন। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে সার্টিফিকেটের মূল কপি খোয়া গেছে বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় মামলা করা হলে মেসটির একজন তত্ত্বাবধায়ককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাড়িভাড়া আদায় বা বাড়ি খালি করা নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন ও নীতিমালা থাকলেও কেউ সেটা তোয়াক্কা করে না বলে জানান মামলা দুটোর তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান।

‘যদি কারও ভাড়া বকেয়া থাকে তা হলে বাড়ি খালি করার আগে ভাড়াটিয়াকে নোটিস দিতে হবে। নোটিসের সময়সীমা পার হওয়ার পর স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এবং তার অনুমোদন নিয়ে মালপত্রের তালিকা করে সেগুলো নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে ফেলা যাবে। বাড়িওয়ালা এসব নিয়মের কোনো তোয়াক্কাই করেননি।’ বাড়িভাড়া নিয়ে যেসব আইন ও বিধিমালা রয়েছে সে বিষয়ে মানুষের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন তিনি বলে মনে করেন।
বাংলাদেশে এই ভাড়াটিয়ারা যেমন চাপের মুখে থাকেন, তেমনটি এমন অনেক বাড়ির মালিক আছেন যাদের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বাড়িভাড়া থেকে পাওয়া টাকার ওপর।

এই টাকা থেকেই তারা পরিশোধ করেন মাসিক কিস্তি, কর্মীদের বেতন এবং বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অনেকেই শহরের বাড়ি ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। আবার যাদের চাকরি চলে গেছে বা ব্যবসা চলছে না তারাও মাসের পর মাস ভাড়া দিতে পারছে না। এসব কারণে ভোগান্তির মুখে পড়েছে ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল বাড়ি মালিকরা।

সারাজীবনের আয় দিয়ে ঢাকার সাঁতারকুল এলাকায় একটি বাড়ি করেছেন রওশন আরা বেগম। কিন্তু তার এক ভাড়াটিয়া দুই মাসের ভাড়া বকেয়া রেখেই বাড়ি ছেড়ে গেছেন। আরেকজনের ব্যবসা খারাপ চলায় নিয়মিত ভাড়া দিতে পারছেন না। এমন অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচে লাগাম টানতে হচ্ছে তাকে। এমন পরিস্থিতিতে সাময়িক সময়ের জন্য কম ভাড়ায় দেওয়ার ব্যাপারে বাড়ি মালিক ও ভাড়াটিয়ারা সমঝোতা করতে পারেন কিংবা একই বাড়িতে দুটি পরিবার একসঙ্গে থাকতে পারেন বলে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ফলে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে সেটা সর্বগ্রাসী।

এক্ষেত্রে ভাড়াটিয়ারা সামনের দুই মাস বা ছয় মাস কম ভাড়া দেবেন বলে সমঝোতা করতে পারেন। আবার বাড়িওয়ালা যেহেতু এখন নতুন ভাড়াটিয়া পাবেন না। তারাও এতে সায় দিতে পারেন। সেটা সম্ভব না হলে, একই বাড়িতে দুটি পরিবার মিলে থাকতে পারে।’ তবে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের অর্থ লেনদেনে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে সেটা দূর করতে অর্থনীতির চাকাগুলো সচল করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

এক্ষেত্রে তিনি সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি সামর্থ্যবানদের বেশি বেশি কেনাকাটা এবং বিত্তশালীদের দান করার পরামর্শ দিয়েছেন। দেশের অর্থনীতি সচল করতে স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই বলেও তিনি জানান। ‘অর্থনীতির সবকিছু একটার সঙ্গে একটা যুক্ত। স্বাস্থ্যসেবা খাত উন্নত করলে মানুষ স্বল্পপরিসরে হলেও রাস্তাঘাটে বের হওয়ার সাহস করবে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারবে, চাকরিজীবীরা অফিস যাবে, শ্রমিকরা তাদের কাজ করবে’- বলেন আহমেদ।

সেসঙ্গে সরকার যদি প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে তা হলে জীবিকাগুলো টিকে যাবে, অর্থনীতির চাকা ঘুরবে, এতে করে সবাই তাদের বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য খরচ চালাতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

সূত্র: বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..