প্রত্যয় ডেস্ক: বছর দশের শিশু ক্যাডেন বেঞ্জামিন থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্যান্ডারটনে। যে বয়সে একটি শিশু তার স্বভাবসুলভ দুরান্তপনায় ঘর মাতিয়ে রাখার কথা, সেই বয়সে বেঞ্জামিনকে সারাক্ষণ বন্দি থাকতে হয় চার দেওয়ালের মাঝে। কারণ প্রেডার উইলি সিনড্রোম নামক এক দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত সে। বিরল এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে বেঞ্জামিনের শরীরে দেখা দিয়েছে দুটি ভয়াবহ সমস্যা। প্রথমটি হলো রাক্ষুসে ক্ষুধা।
তার ক্ষুধার তীব্রতা এতটাই বেশি যে তা রূপকথার রাক্ষসকেও হার মানায়। কারণ দশ বছর বয়সি একটি স্বাভাবিক শিশুর যেখানে দিনে চার থেকে পাঁচ বার খাওয়ার চাহিদা জাগে সেখানে বেঞ্জামিনের সারাক্ষণ ক্ষুধা লেগেই থাকে এবং ক্ষুধা পেলে সে টয়লেট পেপার, কাগজ থেকে শুরু করে ময়লা-আবর্জনা যা সামনে পায় তাই খেয়ে ফেলে। বিশেষ করে যেকোনো ধরনের কাগজ খাওয়াটা তার কাছে নেশার মতো।
সকালের নাস্তায় চারটি পনির টোস্ট, কোকাকোলা এবং রাতের বেঁচে যাওয়া বাসি খাবার দিয়ে তার দিন শুরু হয়। এরপর দুপুরে দুটি বড় সাইজের মুরগি এবং দিনের বাকি সময় সে কিছু না কিছু খেতেই থাকে। তার এই তীব্র ক্ষুধা নিবারণে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় বাবা-মাকে। বেঞ্জামিনের দ্বিতীয় সমস্যা স্থূলতা। মাত্র দশ বছরেই তার ওজন নব্বই কেজি। অতিরিক্ত ওজনের কারণে আর দশটা স্বাভাবিক শিশুর মতো হাঁটা-চলা তো দূরের কথা, তাকে নিঃশ্বাস নিতে হয় কৃত্রিম নলের সাহায্যে। ফলে ধীরে ধীরে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও হয়ে উঠেছে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর।
দূর্বিসহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে শিশু বেঞ্জামিন যেমন তার জীবনের প্রতিটি দিন পার করছে তেমনি বিষাদময় হয়ে উঠেছে তার পিতা-মাতার জীবন। প্রিয় পুত্রকে বাঁচাতে ছুটে যাচ্ছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু কোথাও মিলছে না সমাধান। ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিসেস বেঞ্জামিন বলেন, আমাদের কাছে এখন প্রতিটি দিন হয়ে উঠেছে যুদ্ধের মতো।