প্রত্যয় ডেস্ক:বর্তমানে বিশ্বে করোনা ভাইরাস একটি ভয়াবহ নাম। কিন্তু এমনও হতে পারে একটি নির্দিষ্ট সময় পর ভয়াবহ এই করোনা ভাইরাসই রূপ নিয়েছে মঙ্গলবার্তার বাহক হিসেবে। করোনা ভাইরাস সৃষ্টির পর থেকেই এটিকে ঘিরে সারা বিশ্বে বিস্তর গবেষণা শুরু হয়েছে। শুরুতে ভাইরাসটির উৎপত্তি, গঠন ও জিনগত বিষয়াবলী নিয়ে গবেষণা করা হলেও পরবর্তীতে গবেষণায় যুক্ত হয় ভাইরাসটি হতে বাঁচার উপায় অর্থাৎ, প্রতিষেধক আবিষ্কার। বিগত প্রায় ছয় মাস ধরে কেবলমাত্র করোনা ভাইরাসই সারাবিশ্বে গবেষণার প্রধান বিষয় হিসেবে রূপ পেয়েছে। যা হতে বোঝা যায়, বিশ্বে এখন গবেষণার প্রধান বিষয় জীববিজ্ঞান। অন্যান্য বিষয়ের উপর গবেষণা সম্পূর্ণভাবে থেমে আছে – এমনটিও নয়। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে জীববিজ্ঞান সেক্টরের গুরুত্ব অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিশ্বে এখন গবেষণার মূলকেন্দ্র জীববিজ্ঞান; যাতে অন্তর্ভুক্ত মাইক্রোবায়োলজি এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান।
যেকোনো ভাইরাসেরই মারাত্মক ক্ষতিকারক অপকারিতার সাথে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উপকারিতা যুক্ত থাকে। করোনা ভাইরাসের অপকারিতার ক্ষতিকর দিকটা আমরা দেখতে পেলেও এখনও পর্যন্ত দেখা মিলেনি এর উপকারিতার দিকটি। অবশ্য প্রাথমিকভাবে মানবসৃষ্ট কিছু ক্ষতিকর দিক ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওজোনস্তরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠা, জলবায়ুর পরিবর্তন আংশিক স্বাভাবিক হওয়া, প্রকৃতির স্বাভাবিক রূপ কিছুটা ফিরে পাওয়া এবং পরিবেশ দূষণ অনেকটাই রোধ হওয়াসহ প্রভৃতি উপকারিতা লক্ষনীয়। প্রকৃতিবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদগণের জন্য এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। তবে আনন্দ বা দুঃখ কোনোটাই একা আসে না। তাই দুঃখ হিসেবে আছে করোনা ভাইরাস মহামারীতে মানুষের মৃত্যু।
গত ১৫ জুন, ২০২০ জাপানের একটি আন্তর্জাতিক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ‘২০৩০ সালে আমার পক্ষ থেকে আজকের(২০২০) আমাকে একটি চিঠি লেখার’ জায়গায় আমি লিখেছিলাম, “The long-lived Covid-19 was completely eradicated from the world in 2021. Deadly Cancer has left the world in 2025. Medicines are now made separately for each person.” ২০৩০ সালে আমার অতীত ভাবনায় দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার হবে ২০২১ সালে। মরণঘাতী ক্যান্সারের ঔষধ আবিষ্কৃত হবে ২০২৫ সালে। অধিকন্তু, আগামী দশ বছরের মধ্যেই সম্ভব হবে প্রত্যেক ব্যাক্তির জন্য আলাদা আলাদা ঔষধ তৈরি করা।
চিন্তাগুলো হয়তো অনেকের কাছে কল্পকাহিনী মনে হতে পারে। কিন্তু চিন্তাগুলোর কল্পকাহিনীর মতোই বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে। সুতরাং, অনেকে চাইলে এটাকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীও মনে করতে পারেন।
প্রশ্ন আসতে পারে এর পেছনে করোনা ভাইরাসের অবদান কোথায়? হ্যা, প্রত্যক্ষভাবে করোনা ভাইরাসের অবদান লক্ষ্য করা না গেলেও এর পেছনে পরোক্ষভাবে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক অবদান বিদ্যমান। শুরুতেই বলেছিলাম, শুধুমাত্র করোনা ভাইরাসের কারণে জীববিজ্ঞান হয়ে উঠেছে বর্তমানে বিশ্বে গবেষণার প্রধান বিষয়। করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারে বিজ্ঞানীগণ এমনভাবে লেগে আছেন, যার ফলে দেখা যাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। যাতে উন্মোচিত হবে নতুন নতুন সব আবিষ্কার ও সম্ভাবনার দ্বার।
ভবিষ্যতে আগত সেসকল অপার সম্ভাবনাই করোনা ভাইরাসকে করে তুলবে মানুষের নিকট সুদৃষ্টিপূর্ণ ও প্রশংসিত। অধিকন্তু, করোনা ভাইরাসই হয়ে উঠবে মঙ্গলবার্তার বাহক।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম।