বগুড়ার সংবাদদাতাঃ বগুড়ার কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি শনিবার রাত্রে জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক(প্রস্তাবিত) আবু সাঈদ লেলিনের (৩৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। শহরের কৈগাড়ির ভাড়া বাসার ডাইনিং রুমের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরিফ দৈনিক প্রত্যয় কে জানান, প্রাথমিক তদন্তে তিনি মনে করেন দাম্পত্য কলহে লেলিন আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
জানা যায় যে, আবু সাঈদ লেলিনের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার কৈচড়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত আফতাব উদ্দিন। বগুড়া জেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন লেলিন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ি এলাকায় স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
এস আই শরিফ জানান, তার স্ত্রীর নাম উর্মি। উর্মি ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। উর্মি পুলিশের কাছে দাবী করেন যে, তাদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। যখন ঝগড়া হতো তখন স্ত্রী বেডরুমে ঘুমাতেন এবং লেলিন ব্যালকনির রুমে ঘুমাতেন। শনিবার রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। তখন লেলিন পূর্বের মতো পাশের রুমে ঘুমাতে যান। তখন তার স্ত্রী তাকে ডাকতে যান, কিন্তু তিনি রাগ করার কারণে আসেননি। এরপর রাত ১২ টার দিকে লেলিন পাশের রুম থেকে স্ত্রীর ওরনা নিয়ে গিয়ে ডাইনিং রুমের ফ্যানের সাথে গলায় ফাস লাগান। এসময় তার পায়ের নিচে চেয়ার ছিলো। তার স্ত্রী পাশের রুম থেকে বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে লেলিনের পা চেপে ধরে তাকে রক্ষা করার চেস্টা করেন। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু লেনিন দীর্ঘদেহী হবার কারনে তার ওজন তার স্ত্রীর পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভবপর হচ্ছিলো না। এমন সময়ে লেলিনের পায়ের নিচ থেকে চেয়ার সরে যায় এবং তার গলায় ফাস লাগে। তখন তার স্ত্রী আশেপাশের ফ্লাটের লোকজনকে ডাকতে যান, যখন তিনি লোকজন ডেকে নিয়ে আসেন তখন দেখেন ইতোমধ্যে লেলিনের মৃত্যু হয়েছে। তারপর তারা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে শাজাহানপুর থানার কৈগাড়ি ফাঁড়ির এসআই শরিফ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
এদিকে এলাকাবাসী দাবি বলছেন যে, তার স্ত্রী উর্মির এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিলো । এ নিয়ে লেলিন ও তার স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই দাম্পত্য কলহ লেগে থাকতো। এই কারনেই তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তাকে সঠিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আত্মহত্যার কারণ বের হবে।
এসআই শরিফ জানান, তিনিও লেলিনের স্ত্রীর পরকীয়ার কথা শুনেছেন। তবে তদন্ত ছাড়া এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। রোববার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লেলিনের লাশ তার আত্মীয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শাজাহানপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
বগুড়া জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক (প্রস্তাবিত) জাকারিয়া আদিল দৈনিক প্রত্যয় কে জানান যে, আবু সাঈদ লেলিন তাদের সংগঠনের প্রস্তাবিত কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে শান্ত স্বভাবের ও ভালো মানুষ ছিলেন। তার আত্মহত্যার কোনো কারণ তিনি জানেন না। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।