নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার (পূর্বের অ্যাপোলো) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু। বাবুর এই আকষ্মিক মৃত্যুতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ৪৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারের আঘাতে তাঁর মতো একজন যোগ্য ও দক্ষ নেতা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় বিএনপির সব নেতাকর্মী শোকে মুহ্যমান। অকালে পৃথিবী থেকে তাঁর চলে যাওয়া দলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসিব করুন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির রাজনীতির এক নির্ভিক সৈনিক ছিলেন মরহুম শফিউল বারী বাবু। দলের সব ক্রান্তিকালে তিনি দায়িত্ব পালন করতেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। স্বৈরশাহীর নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে বাবু থাকতেন সামনের কাতারে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি আইনের শাসন, মানবিক মর্যাদা, মৌলিক-মানবাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে।
ফখরুল বলেন, বাবুর রাজনৈতিক চিন্তা ছিল দেশ ও দশের পক্ষে। তাই ছাত্ররাজনীতি শেষ করার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকায় সহায়তা দানের জন্য অসহায় মানুষের পাশে ছুটে যেতেন। নানা বাধার মুখেও মরহুম বাবু দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে অদম্য সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন। দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারের আঘাতে তাঁর মতো একজন যোগ্য ও দক্ষ নেতা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় বিএনপির সব নেতাকর্মী শোকে মুহ্যমান।
ফখরুল আরো বলেন, ছাত্রজীবন থেকে শহীদ জিয়ার আদর্শ ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে দলের সাংগঠনিক তৎপরতায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। এই জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই নেতাকে সইতে হয়েছে সরকারি নানা শারীরিক ও মানসিক জুলুম-নির্যাতন। তাঁর এই সংগ্রামী ভূমিকার জন্য তিনি দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বাবুর ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে ফখরুল বলেন, দেশে করোনার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই নিজের জীবনকে বিপন্ন করে নিরন্ন কর্মহীন মানুষের পাশে বারবার ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। অকালে পৃথিবী থেকে তাঁর চলে যাওয়া দলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসিব করুন। আমি তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকার্ত পরিবার, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পাঠানোর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাবুকে। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাত দেড়টার দিকে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই আজ মঙ্গলবার ভোরে মারা যান তিনি।