কক্সবাজার প্রতিনিধি: চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার জেলে থাকা চার আসামিকে কক্সবাজার জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টার পর থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের ফটকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া ওই চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের উপঅধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান। এ ছাড়া সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া তিন আসামি টেকনাফের সদ্য সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং এসআই নন্দলাল রক্ষিতকে আজ রোববার থেকে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হবে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পড়ুন: বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ ১ কোটি ২৭ লাখ
মেজর মেহেদী হাসান বলেন, শনিবার দুপুর এ চারজনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তারা হলেন- সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশের এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন ও কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন। পর্যায়ক্রমে তাদের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত দলের সদস্যরা রোববার (৯ আগস্ট) পর্যন্ত দুই দিনে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদের কাজ শেষ করা হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করা হবে।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানান, মেজর সিনহা হত্যা মামলার শনিবার চারজন আসামিকে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনের মতো কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ ছাড়া শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মেজর সিনহা হত্যা মামলার রিমান্ডের আদেশ প্রাপ্ত ৭ আসামির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জেলা কারাগারে পৌঁছেছে। এরপরই কারাফটকে র্যাবের তদন্ত দলের সদস্যরা চারজন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। বুধবার নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ জুডিসিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলিকে প্রধান ও ওসি প্রদীপকে দ্বিতীয় করে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার সাতজন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এ মামলার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলিটফোর্স র্যাব আদালতে প্রত্যেক আসামিকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক প্রদীপ, লিয়াকত ও নন্দলালকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর এবং বাকি চারজন আসামিকে দুই দিন করে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেন। এ ছাড়া অনুপস্থিত থাকা বাকি দুজন আসামিকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তবে জেলা পুলিশের দাবি, মামলায় পলাতক থাকা এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোস্তফা নামের কোনো পুলিশ সদস্য বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্র বা টেকনাফ থানায় কর্মরত ছিল না।