বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
মঙ্গলবারই পশ্চিমবাংলাকে সতর্ক করে দিয়ে কড়া ভাষায় চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জানিয়ে দিয়েছিল, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে সব রকম সাহায্য করতেই হবে রাজ্যকে। তার পর মঙ্গলবার রাতেই এই বিতর্কে সুর নরম করে নবান্ন। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, সব রকম ভাবেই কেন্দ্রের নির্দেশ পালন করবে রাজ্য। ফলে রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে দুই তরফে যে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছিল, তার অনেকটাই অবসান হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কলকাতা, হাওড়া–সহ রাজ্যের সাতটি স্পর্শকাতর জেলায় করোনা মোকাবিলার কাজ কেমন চলছে এবং এই অঞ্চলগুলিতে লকডাউন ঠিক মতো মানা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার দুটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। কিন্তু বিষয়টিকে ইগোর লড়াইয়ে নিয়ে যায় রাজ্য সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত করার চেষ্টা বলে বিষয়টিকে উল্লেখও করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবও জানিয়ে দেন, আসার যুক্তিযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা করা না হলে প্রতিনিধি দল দুটিকে রাজ্যে ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার প্রতিনিধি দল দুটি কলকাতা এবং জলপাইগুড়িতে বের হলেও কাজ করতে পারেনি বলে অভিযোগ জানায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। তার পরই সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কড়া চিঠি পাঠায় রাজ্যকে। এর পর নমনীয় হয় রাজ্য। জবাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা চিঠি দেন স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকে। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘বিপর্যয় মোকাবিলা আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলি মেনে কেন্দ্রীয় সরকারের সব নির্দেশ পালন করার পুরোপুরি আশ্বাস দিতে এই চিঠি দেওয়া হচ্ছে।’ চিঠিতে উল্লেখ করা ‘পুরোপুরি আশ্বাস’ কথাটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল। সেই সঙ্গে প্রতিনিধি দল পাঠানো ইস্যুতে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তারও অনেকটাই অবসান হল বলে মনে করা হচ্ছে।
চিঠিতে মুখ্যসচিব আরও লিখেছেন, ‘কেন্দ্রের পাঠানো প্রতিনিধি দলকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ ভুল। সব রকম ভাবেই কেন্দ্রীয় পরিদর্শকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও রাজ্যের চিঠিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। অন্যদিকে, বুধবার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলটির সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রানিডাঙা এসএসবি সদর কার্যালয়ে বৈঠক করেন জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনার তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন।