কক্সবাজার সংবাদাতা:কুতুবদিয়ার বেড়িবাঁধের দাবিতে জনগণের আভিনব প্রতিবাদ ত্রাণ নয় বেড়িবাঁধ চাই নিয়ে এবারের এই প্রতিবেদন লিখতে হচ্ছে । আজ কক্সবাজার জেলার এক দ্বীপ বেষ্টিত চির অবহেলিত উপজেলার জনগণের দুখ দুর্দশার করোন চিত্র তুলে ধরতে বাধ্য হলাম । কেমন যেন একটা আজব উপজেলা যেখানে নেই কোন উন্নয়ন কিংবা জনজীবনের দুর্ভোগ দেখার মত কেউ শুধু মাত্র লোক দেখানো জন্য রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড মোটা কথায় একটি উপজেলার জন্য যত ধরনের প্রশাসনের প্রয়োজন সব কিছু আছে কিন্তু প্রকৃত উন্নয়ন কাজ তরান্বিত করার মনোভাব নিয়ে কেউ ওখানে চাকরি করে কিংবা জনগণের সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য নেই কেউ। বর্তমানে কুতুবদিয়ার ৬ ইউনিয়ন অরক্ষিত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে গৃহহারা হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। মাথা গুজার ঠাই টুকু সাগরে বিলিয়ন হয়ে যাচ্ছে।
বিগত ৬ দিন ধরে বৈরী আবহাওয়া ও অমাবস্যার প্রবল জোয়ারে কুতুবদিয়া উপজেলার চারিদিকে সমুদ্রের লবনাক্ত পানির আনাগোনায় কুতুবদিয়ার মানুষের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। ১৯৯১সালের প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের এর পর থেকে কুতুবদিয়ায় একের পর এক সিড়র, বিজলি, আইলা, রোয়ানু এবং আমফান এর মত প্রলয়ংকারী প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় গুলো আঘাত করে। যার ফলে কুতুবদিয়ার বেড়িবাঁধ আরও জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি একটা স্থায়ী, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।সেই আবেদন এখনো পূরণ হয়নি বরং ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে মনের অন্তঃবেদনার গহীন বৃত্তের ভিতরে চলে গেছে।
কিন্তু সরকার কুতুবদিয়ার মানুষের জানমাল রক্ষার্থে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। শুধু টাকা দিয়ে বাঁধ দিলেও এভাবে পানি ঢুকতে পারেনা।বিগত১৯৯১ এর পর থেকে কত আপনজনের হাড়গোড় সমুদ্রের অতল তল স্পর্শ করেছে তার কোন ইয়াত্তা নেই। কুতুবদিয়া বাসীর ভাগ্য বড়ই খারাপ, নির্মম, বরাদ্দের বেশির ভাগই বিভিন্ন নেতা, উপনেতা, কনট্রাকটর, সাব কনট্রাকটর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন লোকের হাত ধরে অদৃশ্যর অতল গহবরে তলিয়ে গেছে। কুতুবদিয়ায় কখনও নেতা, সরকারি উচ্চ পদে আসীন মানুষের অভাব ছিলনা। অভাব কখনও হবেনা। সদিচ্ছার অভাবে এরাতো নিজেদের পরিবার পরিজন নিয়ে বাংলাদেশের নিরাপদ শহরে বাড়ি ঘর কিভাবে করবে সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কুতুবদিয়ার মানুষের আবাসন,জীবন মান নিয়ে এদের কোনো চিন্তা থাকেনা। কিন্তু এসব মানুষের পোস্টার, ছবি, ব্যানার কুতুবদিয়ায় যত্রতত্র শোভা পাচ্ছে। একসময় সমুদ্রের নোনা জলে স্নান করবে। এভাবে কুতুবদিয়া বিলীন হওয়ার দ্বিতীয় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।
জলবায়ু পরিবর্তন বিযয়ক জাতিসংঘের আন্তঃ সরকার প্যানেল(IPCC) এর মূল্যায়নে জানিয়েছেন যে, এই শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন, anthropogenic problem (মানব সৃষ্ট সমস্যা ) এর কারণে সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। উল্লেখ্য যে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচ প্রকাশিত Global climate risk index (CRI) অনুযায়ী জলবায়ু জনিত ক্ষতির বিচারে শীর্ষ দশটি ক্ষতিগ্রস্থ দেশের মধ্যে প্রথমেই অবস্থান করবে বাংলাদেশ। বর্তমানে কুতুবদিয়া দ্বীন বেষ্টিত উপজেলাটি রক্ষা করতে , মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন করছে সমগ্র কুতুবদিয়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।এদের দাবী যদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় একটি স্থায়ী, টেকসই বেড়িবাঁধে আশা করা যাবে। বতর্মানে সমগ্র কুতুবদিয়ার জনগণের একটি চাওয়া ত্রাণ নয় -টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে কুতুবদিয়াকে রক্ষা।