বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
কলকাতার গঙ্গায় ভেসে বেড়াচ্ছে ডলফিন। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই সত্য ঘটনা ঘটছে কয়েকদিন ধরে। এই খবরে রীতিমতো উচ্ছ্বাসিত পরিবেশ প্রেমীরা।
করোনা মোকাবিলায় ২২ মার্চ গোটা ভারতে জনতা কারফিউর ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পর ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন করে দেন দেশে। সেই শুরু। এখনও অবধি ঠিক আছে ৩ মে অবধি চলবে এই লকডাউন। শুধু ভারত নয়, গোটা পৃথিবী জুড়েই চলছে এই প্রক্রিয়া। ফল আর যাই হোক, দূষণ কিন্তু কমেছে অনেকটাই। শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, এমনকী নদ–নদীগুলির জল দূষণও এক ধাক্কায় বহুগুণ কমে গিয়েছে। দূষণ এতটাই কমেছে যে, হরিদ্বারে গঙ্গার জল পানযোগ্য হয়ে উঠেছে।
তাই গাছগাছালিতে এখন দেখা মিলছে জানা–অজানা হাজার এক রকম পাখি। অরণ্যের কাছাকাছি অবস্থিত নগরগুলিতে কখনও দেখা মিলছে হরিণের, কখনও বা ঘুরে বেড়াচ্ছে গণ্ডার। বিষয়গুলি শহুরে শিক্ষিত মানুষের কাছে যে চমকপ্রদ, তা বলাই বাহুল্য। ঠিক এমন ধরনেরই চমক দিল ডলফিনরা। খোদ কলকাতার গঙ্গায় মনের আনন্দে ভেসে বেড়াতে দেখা গেল তাদের। অবশ্য লকডাউনের সৌজন্যে কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাট এবং বাবুঘাটে এমন চমক দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল না। পথ চলতি সামান্য কয়েকজনের চোখে পড়ে এই দৃশ্য। তারাই কেউ কেউ সেই ছবি তুলে রাখেন।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জল দূষণ কমে যাওয়ায় নদীগুলিতে মাছের সংখ্যা বেড়েছে। গঙ্গাও তার ব্যতিক্রম নয়। এই মাছগুলিই ডলফিনদের খাদ্য। এইসব মাছের ঝাঁকের শব্দ শুনেই তারা চলে আসছে গঙ্গায়। তা ছাড়া ডলফিনরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে। শব্দ এবং জলে দূষণ থাকলে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বা সংকেত পাঠাতে পারে না। লকডাউনে দূষণ কমায় গঙ্গায় সেই সমস্যা অনেক কমে গিয়েছে। তাই ডলফিনরা গঙ্গায় চলে আসছে। গঙ্গায় দূষণে সাউথ এশিয়ান রিভার ডলফিন বা এই গাঙ্গেয় শুশুকরা হারিয়ে যাচ্ছিল। তবে লকডাউন উঠে গেলে ফের দূষণ বাড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা। তখন হয়তো এই ডলফিনদের আর দেখা যাবে না। অবশ্য গঙ্গায় এখন তাদের দেখা মেলায় পরিবেশবিদরাও উচ্ছ্বসিত।