প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ গ্রিস এবং সাইপ্রাসের চলমান উত্তেজনা নিরসনে ভূমিকা পালন করতে আগেই জানিয়েছিল ইউরোপিয় ইউনিয়ন। তুরস্ককে এটি কমানোর জন্য দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়ার কথাও বলে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। উত্তেজনা কমাতে ব্যার্থ হলে তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার আরোপ করা হবে মর্মে হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বার্লিনে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল এ কথা জানান। তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের অনুসন্ধান কার্যক্রম সংক্রান্ত সবকিছুকেই অবৈধ হিসেবে বিবেচনার কথা ভাবছে বলেও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, তুর্কি-গ্রিস বিবাদে গ্রিসের প্রতি সমর্থন জানাতে এ বৈঠকের আয়োজন করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
জোসেফ বরেল বলেন, আমি তুরস্কের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ দেয়ার কথা বলে আসছি অনেক আগ থেকে। এবার যদি গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে আলোচনায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হয়, তুরস্ক যদি সেটি করতে ব্যার্থ হয় তবে নিষেধাজ্ঞা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই আমাদের হাতে। তার এই হুমকির ফলে ওই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেয়া দিয়েছে। এমনকি খুব শিঘ্রই সামরিক সংঘাত দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে তুরস্কের বহুদিন ধরে ভূমধ্য সাগরে তেলগ্যাস অনুসন্ধান ও সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। কিছুদিন আগে তুরস্ক ওই কৃষ্ণ সাগরে নিজেদের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় গ্যাসের খনির সন্ধান পায়। যেটি বিতর্কিত অঞ্চলে হওয়ার এই উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। এরই মধ্যে ওই অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে সবগুলো পক্ষ। এতে যোগ দিয়েছে সাইপ্রাসের পক্ষে ফ্রান্স, মিশরসহ কয়েকটি দেশ। অন্যদিকে তুরস্কের সঙ্গে যৌথ নৌ-মহড়া পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
জোসেফ বরেল বলেন, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তুরস্কের জাহাজ, নৌ চলাচল এবং ইইউ’র সমুদ্র বন্ধর থাকবে। যাতে করে তুরস্ক সাগরে আধিপত্য বজায় রাখতে না পারে। এটি তুরস্ককে ক্ষতির মুখে ফেলবে। আমরা ওই অঞ্চলে তুরস্কের কার্যক্রমকে অবৈধ মনে করি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অঞ্চলে জ্বালানি সম্পদের বিষয়ে তুরস্কের দাবির বিরুদ্ধে মিশর ও গ্রিসের সমুদ্র চুক্তি অনুমোদন দেয়। এর পর বার্লিনে গ্রিসের সমর্থনে এক আলোচনার পর সংবাদ সম্মেলনে এসব হুমকি দেয়া হয়।
তবে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তুরস্ক। তাৎক্ষণাত দেশটির ইইউ-এর দাবিকে অযৌক্তিব বলে আখ্যা দিয়েছে। এবং গ্রিস ও সাইপ্রাসের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই অঞ্চলে তুরস্ক নিজেদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন