বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
পশ্চিমবাংলায় কি করোনা আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৫৭? শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে এমন প্রশ্নই উঠে আসছে বিভিন্ন মহলে। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে রাজ্য ফের তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
এদিন মুখ্যসচিব বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনও রোগী মারা গেলে তাঁর মৃত্যু করোনার জন্য, নাকি অন্য কোনও কারণে হয়েছে, তা জানতে রাজ্য সরকার একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছিল। এখনও পর্যন্ত সেই কমিটির কাছে ৫৭টি করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা পাঠানো হয়েছে।’ সেই ৫৭ জনের মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু করোনার জন্যই হয়েছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে কমিটি। এই ১৮ জনের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এমন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫। করোনায় মৃত ১৮ জন ছাড়া বাকি ৩৯ জন মৃত করোনায় আক্রান্ত হয়ে হলেও তাঁদের মৃত্যুর কারণ ছিল অন্য।
কিন্তু শুক্রবার আচমকা এমন কথা বললেন কেন মুখ্যসচিব? কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের কাজ নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলাতেই কি তিনি সম্পূর্ণ তথ্য দিলেন? এ কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে মুখ্যসচিব বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে একটা কম্পাইলড রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। ঘটনাচক্রে শুক্রবারই সেই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।’
কিন্তু স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে কখনও বিশেষজ্ঞ কমিটির এমন বক্তব্য কখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যে কারণে সরকার তথ্য গোপন করছে বলে বিরোধী দলগুলি বারবার অভিযোগ করেছে। যদিও সরকার ততবারই বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে। মুখ্যসচিবও এদিন জানান, রাজ্যের সমস্ত হিসেবই খোলা খাতার মতো। সেখানে কোনও রকম কারচুপি নেই।
মুখ্যসচিবের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে ৫১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এই ৫১ জন সাতটি জেলার বাসিন্দা। কলকাতায় সংক্রমণ বেশি হলেও বৃহস্পতিবারের তুলনায় একটু কম বলে মুখ্যসচিব এদিন জানান। তবে প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের হল, করোনা শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও গত ২৪ ঘণ্টায় পূর্ব মেদিনীপুরে কয়েকজন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে।