প্রত্যয় ডেস্ক: রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার লুক্সেমবার্গে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে এ মতৈক্য হয়েছে। রুশ সরকার কর্তৃক দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সাই নাভালনি-কে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার দায়ে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। লুক্সেমবুর্গে ২৭ মিনিটের আলোচনাতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারে একমত হন ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে ইইউ।
সপ্তাহখানেক আগেই জার্মানি ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানান, রুশ সরকারই নাভালনিকে বিষ প্রয়োগ করে মারতে চেয়েছিল। তাদের প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেই এখন কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য এখনই চালু হচ্ছে না। কারণ, আগে এর খসড়া তৈরি হবে। ওই খসড়া নিয়ে পর্যালোচনা করবেন আইন বিশেষজ্ঞরা। এরপরই সদস্য দেশগুলোর সম্মতি নিয়ে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
জার্মানি ও ফ্রান্সের মতে, রুশ কর্তৃপক্ষ জড়িত না থাকলে নাভালনিকে বিষ প্রয়োগ করা সম্ভব হতো না। মস্কো এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের ফল পেতে হবে রাশিয়াকে। এর জন্য জার্মানি ও ফ্রান্স চায় দায়ী কিছু ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হোক।
ইইউ-র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, তারা লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চান। বেলারুশে লুকাশেঙ্কো যেভাবে বিক্ষোভকারীদের দমন করছেন ফলে তার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চান তারা। এতোদিন ধরে লুকাশেঙ্কো বিক্ষোভকারীদের ধরে ধরে কারাগারে পাঠিয়েছেন। পুলিশ লাঠিচার্জ করছিল। কাঁদানে গ্যাস দিয়ে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলা করা হচ্ছিল। সর্বশেষ নিরাপত্তা কর্মীদের বিক্ষোভকারীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেলারুশে সহিংসভাবে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলা করা হচ্ছে। ইইউ এটা মেনে নিতে পারছে না। তাই লুকাশেঙ্কো-সহ উচ্চপদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। জর্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, ‘বেলারুশে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সরকার সহিংস পথে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মোকাবিলা করছে। বিক্ষোভকারীদের গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাই আমরা লুকাশেঙ্কোসহ অন্যদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বলছি।’ সূত্র: ডিডব্লিউ।