নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি নূর হোসেন ও তার ৫ সহযোগীকে এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলার রায়ে খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আরও ৬টি মামলার শুনানি হয়েছে। নূর হোসেনের সঙ্গে খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- নূরের ভাতিজা কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, শাহজাহান, মর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ ও বুলবুল।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমীন আহমেদ বলেন, ২০১৩ সালের ৩০ মে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হিরাঝিল এলাকার ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে নূর হোসেন ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে ইকবালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে নূর হোসেন ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে নূর হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় নূর হোসেনসহ তার ৫ সহযোগীকে আদালত খালাস প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণার পর আদালতে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ ৬টি মামলায় শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে একটি চাঁদাবাজি ও একটি অস্ত্র আইনের মামলায় যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ৪টি মামলায় সাক্ষী আসেনি। আদালত ৬টি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। আদালত সূত্র জানায়, সকাল ৯টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নূর হোসেনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয়। মামলার কার্যক্রম শেষে নূর হোসেনকে ফের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬টি মামলার মধ্যে ২০১৪ সালে ৭ খুনের পর নূর হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ৩টি মামলা করে পুলিশ। ২০১৪ সালের ১২ জুন ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে অটোরিকশাচালক সাইদুল ইসলামের মামলায় নূর হোসেন, তার ভাই নূর উদ্দিন, তাদের ভাতিজা শাহজালাল বাদল, লোকমানসহ ৪ জনকে আসামি করা হয়।
শিমরাইলে নূর হোসেনের মাদক স্পট থেকে ২৯০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের এসআই শওকত হোসেন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সাত খুনের পর নূর হোসেনের বৈধ অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিল করে জেলা প্রশাসন। সেটি জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু সেটি জমা না দিয়ে নূর হোসেন দেশের বাইরে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের হয়।