নিজস্ব প্রতিবেদক: সার্ভার থেকে তথ্য পাচার করে প্রতারক চক্রকে দেওয়ার অপরাধে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতিরঝিল থানা পুলিশ। মামলায় গ্রামীণফোন লিমিটেড ছাড়াও কাস্টমার কেয়ারের একজন কর্মীসহ দুই জনকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ গোলাম আজম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। হাতিরঝিল থানার মামলা নম্বর ২৪। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন—গ্রামীণফোন লিমিটেড, রুবেল মাহমুদ অনীক ও পারভীন আক্তার।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোন কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত রুবেল মাহমুদ অনীক টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের সিম রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহৃত গোপনীয় তথ্য একটি সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেইলিং চক্রকে সরবরাহ করেছে। যে তথ্যগুলো ব্যবহার করে এই চক্রটি অসংখ্য লোককে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’
টার্গেট ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলার জন্য ব্ল্যাকমেইলিং চক্রটির মূল অস্ত্রই হলো, গ্রামীণফোনের সিম রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহৃত টার্গেট ব্যক্তির গোপনীয় তথ্য। গ্রামীণফোন গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি জানান। গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা সুরক্ষায় ব্যর্থতা, উদাসীনতা ও তথ্য ভাণ্ডারে বেআইনি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে তথ্য পাচারের ঘটনা ঘটেছে। গ্রামীণফোন এ দায় এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়— গ্রমীণফোন কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে গ্রামীণফোন সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত আসামি রুবেল মাহমুদ অনীক টাকার বিনিময়ে সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেইলিং চক্রটির মূলহোতা পারভীন আক্তার নুপুরকে তার চাহিদা মতো গ্রাহকদের সিম নিবন্ধন সংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করে। যে তথ্য ব্যবহার করে পারভীন আক্তার নুপুর চক্রের অন্য আসামিদের যোগসাজশে অসংখ্য লোককে ব্ল্যাকমেইলিং করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এর আগে, গত সপ্তাহে তেজগাঁওয়ের গ্রামীণফোনের সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত এক কর্মীর সহযোগিতায় সার্ভার থেকে গ্রাহকের তথ্য চুরি এবং তাদের ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকার হাতিরঝিল থানা পুলিশ। ওই চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন পারভীন আক্তার নূপুর নামে এক নারী। এই ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত হচ্ছে।