1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষা বর্জন, হলে ভাঙচুর : গ্রেফতার ৪৯

  • Update Time : সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ১৮৭ Time View

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় রাজধানীর তিন থানায় করা পৃথক মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউমার্কেট থানা ৩৭, মোহাম্মদপুর থানা ১১ ও সূত্রাপুর থানা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে৷

এদিনই রাজধানীর ৯টি কেন্দ্রে বার কাউন্সিলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে হামলা চালানো হয় মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজে। হামলাকারীরা পরীক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে তাদেরকে জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এছাড়া, পরীক্ষা বর্জনের ঘটনা ঘটে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে।

এই দুই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা জানান, সকাল ৯টা থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টার মধ্যেই প্রশ্ন কঠিন হয়েছে এমন অভিযোগে লক্ষ্মীবাজারে মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে কিছু শিক্ষার্থী বের হয়ে যায়। এ সময় পরীক্ষা বর্জনকারীরা পরীক্ষার্থীদেরকেও জোর করে বের করে দেন।

এদিকে, এক ঘণ্টার মতো পরীক্ষা চলার পর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রে একদল লোক ঢুকে পরীক্ষারত শিক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং তাদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।

মোহাম্মদপুর কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘২০-২৫ জনের একটি গ্রুপ কলেজের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং বের করে দেয়।’

একই কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশ্ন কঠিন হলেও প্রস্তুতি থাকায় ভালোভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে একদল লোক এসে আমাদের বের করে দেয়। পরে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে জানিয়ে কেন্দ্র সচিব আমাদের খাতা জমা নিয়ে নেন।’

শনিবার রাজধানীর নয়টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ লিখিত পরীক্ষা। এর মধ্যে প্রথমে মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে হামলার অভিযোগ ওঠে।

এছাড়া, সায়েন্স ল্যাবরেটরির কেন্দ্রেও পরীক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে বের করে দেয়ার খবর পাওয়া যায়। পরীক্ষা বর্জনের ঘটনা ঘটেছে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে।

কেন্দ্রগুলোর মধ্যে কেবল মোহাম্মদপুর কেন্দ্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে পরীক্ষা নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বারকাউন্সিলের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে তারা আর আইনজীবী চান না। বছরে দুটি পরীক্ষার কথা থাকলেও ৩-৪ বছর লেগে যাচ্ছে একটি পরীক্ষা শেষ করতে। তাদের অভিযোগ, ‘বার কাউন্সিলের ইতিহাসে এবারের মতো এমন জটিল এমসিকিউ এবং লিখিত পরীক্ষা কখনো হয়নি।’

এদিকে, কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পেয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল পরীক্ষায় নজিরবিহীন নৈরাজ্যের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তবে প্রকৃত পরীক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে বার কাউন্সিলকে অনুরোধ জানান কাজল।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এক দফা পিছিয়ে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা নেয়া হয়। তবে, বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত কারণে কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়নি আবার কোনো কেন্দ্রে সময় বাড়িয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।

এতে অংশ নেন প্রায় ১৩ হাজার পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা নেয়া হয়- আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, সূত্রাপুরে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, টিকাটুলীর সেন্ট্রাল ওমেন্স কলেজ, বিসিএসআইআর হাই স্কুল ও লক্ষ্মীবাজারের ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে।

সকালে পরীক্ষা শুরুর পরপরই ‘প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে’ এমন অভিযোগ তুলে মোহাম্মদপুর ও পুরান ঢাকার কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে। এসব কেন্দ্রে হট্টগোল, ভাঙচুরের কারণে পরীক্ষাই হয়নি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।

তবে কেন্দ্রে হট্টগোল, পরীক্ষা বর্জন বা পরীক্ষা না দিতে বাধ্য করানোর ব্যপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি বার কাউন্সিলের সচিব রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘শুনেছি মোহাম্মদপুরের একটি কেন্দ্রে হট্টগোল হয়েছে। এর বেশি কিছু আপাতত বলতে পারব না।’

হট্টগোল-ভাঙচুরের এক পর্যায়ে পরীক্ষার্থীদের খাতা ও প্রশ্নপত্র ফেলে দেয়া হয় কেন্দ্রের বাইরে।

পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‌‘যারা পরীক্ষা দিতে চেয়েছে কিন্তু পারেনি তাদের ব্যাপারে পরে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারলে আমরা ব্যবস্থা নেব। যারা পরীক্ষা দিতে পারেনি তারা কি বাধ্য হয়ে দিতে পারেনি, নাকি ইচ্ছা করে দেয়নি, তা বুঝে-শুনে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

‘এর বেশি এখন তো কিছু করতে পারব না। তাছাড়া আমি একা তো কিছু করতে পারব না, সবার সাথে বসতে হবে। আমাদের পাঁচজনের কমিটি। এই পাঁচজন মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

লক্ষ্মীবাজারের ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন এমন একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সব এলোমলো হয়ে গছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর ৫ মিনিটের মাথায় পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রের গেট ভেঙে প্রশ্ন, খাতা নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যায়। পুলিশ তখন একেবারেই নীরব ছিল। আধাঘণ্টার ওপরে এই অবস্থা ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে টিমসহ ম্যাজিস্ট্রেট আসলে কিছু পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে ঢোকে। আমি কেন্দ্রের ভেতরেই ভাঙা টেবিলে বসে ছিলাম। কিন্তু ভেতরে তখন শিক্ষকরা ছাড়া কেউ ছিল না। পরবর্তীতে আমিসহ কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিই। এক ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।’

এই পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, ‌‘পরীক্ষা দিতেই এসেছিল সবাই। কিন্তু অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং বার কাউন্সিলের ইতিহাসে নজিরবিহীন প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্ন হয়েছে। মানদণ্ড বজায় রেখে এ প্রশ্নপত্র করা হয়নি।’

একই অভিযোগ করেন সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী জাহির।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্ধারিত সময়ের আগে কেন্দ্রে ঢুকি। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর পরই পরীক্ষার্থীরা হইচই শুরু করে। প্রশ্নটা একেবারেই ব্যতিক্রম হয়েছে। গতানুগতিক যে প্রশ্ন করে আসছে বার কাউন্সিল, সেরকম প্রশ্ন এবার হয়নি।’

‘এক পর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থীরা অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নিতে শুরু করে। দরজা-জানালা ভাঙচুর করে তারা। প্রশ্নপত্র, খাতা মাঠে ফেলে দেয়। কেউ কেউ স্বেচ্ছায়ও ফেলে দিয়েছে। সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে এ পরিস্থিতি। সেসময় ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়িত্বরত শিক্ষকরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য একটা রুমে আশ্রয় নিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রক ঘোষণা দেন পরীক্ষা হবে না। বাসায় চলে যেতে বলেন পরীক্ষার্থীদের। ঘোষণা দেয়ার পরেও যখন কিছু পরীক্ষার্থী বের হচ্ছিল না, তাদের পুলিশ এসে পিটিয়ে বের করে দেয়। সাড়ে ১১টার মধ্যে গোটা কেন্দ্র খালি করে ফেলা হয়। এরপর আর পরীক্ষাই হয়নি।’

সর্বশেষ ২০১৭ সালে অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার মহামারির কারণে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির লিখিত এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..