বিশেষ সংবাদদাতা:
অবশেষে করোনা–সম্পর্কিত বিস্তারিত বুলেটিন প্রকাশ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সোমবার স্বাস্থ্য ভবনের এই বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় মোট কোভিড–১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৫৯ জন। তাঁদের মধ্যে এখন চিকিৎসাধীন ৯০৮ জন রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ জন। এদিন পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫ হাজার ১১৬ জনের। যদিও ৯ কোটি রাজ্যবাসীর মধ্যে মাত্র ২৫ হাজার ১১৬ জনের পরীক্ষা হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি।
বিস্তারিত বুলেটিন প্রকাশে দেরি হওয়া সম্পর্কে এদিন বিকেলে নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, ‘এতদিন আমরা রাজ্যের সব জায়গা থেকে একসঙ্গে সব তথ্য পাচ্ছিলাম না। বেসরকারি হাসপাতালগুলি থেকে তথ্য পেতে দেরি হচ্ছিল। এখন সরকারি ও বেসরকারি —সব হাসপাতাল থেকেই ঠিকমতো তথ্য এসে পৌঁছেছে। তাই এই বিস্তারিত বুলেটিন প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে।’ তিনি জানান, রাজ্যে কোভিড আক্রান্ত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ৬১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এ ছাড়া অডিট কমিটি আগেই জানিয়েছিল, আরও ৭২ জন করোনা আক্রান্ত মারা গিয়েছেন কো–মর্বিডিটির কারণে।
বুলেটিন থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় যে ৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতারই রয়েছেন ২৪ জন। আর হাওড়ায় নতুন করে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বুলেটিনের তথ্য থেকে এদিন মুখ্যসচিব জানান, বাংলায় প্রতি ১০ লক্ষে করোনা পজিটিভ ১৩.৯৮ শতাংশ। প্রতি ১০ লক্ষে মৃত্যু ১.৪৭ শতাংশ। যদিও রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বিরোধী দলগুলি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, করোনা পরীক্ষায় এই রাজ্য অন্য সব রাজ্যের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
মোট জনসংখ্যার অনুপাতে রাজ্যে আরও অনেক বেশি করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘করোনা পরীক্ষা বেশি হলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ধরা পড়ে যাবে বলে কি ভয় পাচ্ছে রাজ্য সরকার?’ তিনি জানান, এ ভাবে পরীক্ষা না করে আসলে রাজ্যবাসীরই ক্ষতি করা হচ্ছে। তিনি এই অভিযোগও করেন, যথেষ্ট সংখ্যক কিট থাকা সত্ত্বেও এখানে সেই সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না।
পাশাপাশি এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘সারা দেশে পশ্চিমবাংলাতেই করোনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। অনেক হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে। সেই হাসপাতালগুলি স্যানিটাইজ করে খুলে দিন।’ পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় কী করা উচিত, সে বিষয়েও নিজের ধারণার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।