বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন ভবন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পয়ঃনিষ্কাশনের লাইন বা সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করে পয়ঃবর্জ্য নিঃসরণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন থেকে ছয়মাসের মধ্যে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঢাকা ওয়াসাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভবন মালিক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকলকে সতর্ক করে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে নোটিশ দিতে বলা হয়েছে। মাইকিং করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ভবন বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলা হয়।
বুড়িগঙ্গা নদী দূষণরোধে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট মামলায় মঙ্গলবার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। ঢাকা ওয়াসার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট উম্মে সালমা, রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ও পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম।
আদালত রাজউকের প্রতি ৭দফা নির্দেশনা দেন। এগুলো হলো-
(১) সেপটিক ট্যাংক বা পয়ঃলাইন না থাকলে কোনো লে-আউট প্ল্যান অনুমোদন দেয়া যাবে না।
(২) সেপটিক ট্যাংক না থাকলে ভবনের দখলদারিত্বের সনদ দেয়া যাবে না।
(৩) আইন ভঙ্গ করে কাজ করলে ভবন নির্মাণ আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(৪) ৩ থেকে ৬ মাসের নোটিশ দিয়ে ভবনে পয়ঃপানি শোধনের ব্যবস্থা নতুবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(৫) পরবর্তীতে তৈরিকৃত সেপটিক ট্যাংক মূল নকশার অংশ বিবেচিত হবে।
(৬) নোটিশের পর কোনো ভবন মালিক নকশা সংশোধন না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(৭) ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে এবং পরে প্রতি ৩ মাসে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
এইচআরপিবির করা রিট মামলায় ২০১১ সালে এক রায়ে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এছাড়া নদীর পানি যাতে দুষিত না হয় সেজন্য সব ধরনের বর্জ্য ফেলা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এখনও কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। যা নদীর পানিকে দূষিত করছে। বিষয়টি এইচআরপিবির পক্ষ থেকে আদালতের নজরে আনা হলে আদালত সময়ে সময়ে আদেশ দেন।