1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

গুজবে টালমাটাল শেয়ারবাজার

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১
  • ১৯৯ Time View

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) টালমাটাল হয়ে পড়ে দেশের শেয়ারবাজার। আতঙ্কে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে দেখতে দেখতে ধসে রূপ নেয় শেয়ারবাজার।

বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে দরপতন হয় একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। অপরদিকে ক্রেতার সংকট থাকায় লেনদেনও কমেছে। আর বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় দরপতনের মধ্য দিয়ে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৫০ পয়েন্টের উপরে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে বেলা ১১টা ১৪ মিনিটে হঠাৎ করে ডিএসইর ওয়েবসাইটে লাইভ আপডেট দেখানো বন্ধ হয়ে যায়। ৪৬ মিনিট বন্ধ থাকার পর দুপুর ১২টা থেকে আবার লাইভ আপডেট দেখাতে থাকে ডিএসই।

এর মধ্যেই বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ দাম কমিয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে দেখতে দেখতে বড় ধস নামে শেয়ারবাজারে।

এদিকে শেয়ারবাজারে ধস নামায় তাৎক্ষণিক খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিএসইসি জানতে পারে- করোনার প্রকোপ বাড়ায় শেয়ারবাজার বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় বাজারে বড় দরপতন হয়েছে।

এর প্রেক্ষিত্রে বিএসইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, করোনার প্রকোপ বাড়লেও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নেই। ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজারও খোলা থাকবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা দেয়ায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি গুঞ্জন ছড়িয়েছে- করোনার প্রকোপ বাড়ায় শেয়াবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা কমিশনের নেই। ব্যাংক যদি খোলা থাকে করোনার প্রকোপ যতই বাড়ুক শেয়াবাজার খোলা থাকবে।’

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন আশ্বাসের পর পতনের মাত্রা কিছুটা কমলেও ধসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজার। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮১ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৪৩৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অবশ্য করোনার প্রকোপেও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হবে না এমন সংবাদ প্রকাশের আগে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০১ পয়েন্ট পড়ে যায়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে একই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে শেষ মুহূর্তের লেনদেনে পতনের মাত্রা কমে।

এদিকে প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। আগের দিনের তুলনায় এই সূচকটি ৩৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৯টির। আর ৯২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৯৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে লেনেদেন কমেছে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৮২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ৩৬ কোটি ৩১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, জিবিবি পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, সামিট পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং লুব রেফ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬০টির এবং ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গুজব ছড়াতে ডিএসইর সহায়তার অভিযোগ

ডিএসইর ওয়েবসাইটে লাইভ আপডেট বন্ধ হওয়া গুঞ্জন ছড়াতে কারসাজি চক্রকে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ডিএসইর একাধিক সদস্য বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টা ডিএসইর ওয়েবসাইটে লাইভ আপডেট দেখানো বন্ধ ছিল। এতে একটি চক্র বাজারে গুঞ্জন ছড়ায়- করোনার প্রকোপ বাড়ায় শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’

লাইভ আপডেট বন্ধ হওয়ার আগে ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিটের লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৩ পয়েন্ট কমে যায়। এর পরই বন্ধ হয়ে যায় ডিএসইর লাইভ আপডেপ। বেলা ১১টা ১৪ মিনিটে বন্ধ হয়ে যাওয়া লাইভ আপডেট ৪৬ মিনিট বন্ধ থাকার পর দুপুর ১২টা থেকে আবার শুরু হয়।

লাইভ আপডেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-মাহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘একটা সুইচে সমস্যা হওয়ায় ওয়েবসাইটের লাইভ আপডেট বন্ধ হয়ে যায়। তবে লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি।’

অপরদিকে প্রায় এক ঘণ্টা ডিএসইর ওয়েবসাইটে লাইভ বন্ধ রাখার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করেতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপতাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ডিএসইর ওয়েবসাইটের সমস্যার বিষয়ে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ওয়েবসাইটের আপডেট বন্ধ থাকলেও লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। তারপরও এ বিষয়ে অন্যকিছু আছে কি-না তা ক্ষতিয়ে দেখবো।’

নেই সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কামার কারণে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা, যা বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..