প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সারাদেশ এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।
শনিবার (৩ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির কারণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই প্রতিদিন ছয় হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার একদিনে শনাক্ত সাত হাজারের কাছাকাছি পৌঁছায়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, এক সপ্তাহের এই ‘লকডাউন’ সোম অথবা মঙ্গলবার শুরু হতে পারে।
এখই চূড়ান্ত দিন তারিখের কথা উল্লেখ করেননি মি. হোসেন, তিনি বলছেন জনগনকে প্রস্তুতি নেবার সুযোগ দেয়া হবে।
কীভাবে এই লকডাউন কার্যকর হবে তার বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
তবে ফরহাদ হোসেন জানাচ্ছেন, জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া গার্মেন্ট ও অন্যান্য শিল্প-কারখানাগুলো লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
সরকার বলছে করোনাভাইরাসে দ্বিতীয় ঢেউ সামলানোর জন্য এটা করা হয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে যে সংখ্যায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে প্রতিদিনই শণাক্তের আগের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে জানানো হয় ২৪ ঘণ্টায় ২৯,৩৩৯ টি নমুনা পরীক্ষায় ৬,৮৩০ জনের মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে।
পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩.২৮ শতাংশ।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ১৮দফা নির্দেশনা দেয় ।
ইতিমধ্যে দেশের সব পর্যটন কেন্দ্র গুলো ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে এর আগে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে লকডাউন চলেছে গত বছর। তবে ২৬শে মার্চ ২০২০ সালে শুরু হওয়া সেই লকডাউন পরিস্থিতিকে সরকার ‘সাধারণ ছুটি’ বলে অভিহিত করেছিল।
দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ করার আগ পর্যন্ত আক্রান্ত বাড়ি, প্রয়োজনে জেলা-উপজেলা ইত্যাদি লকডাউন করা হয়েছিল।
২০২০ সালের ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ২৯টি জেলা সম্পূর্ণ এবং ১৯টি জেলা আংশিকভাবে লকডাউন করা হয়েছিল।
বিভিন্ন দেশের মত দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ না হলেও সারা দেশেই অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মুক্তভাবে চলাচলের উপর বাধা আরোপ করা হয়েছিল।
সারা দেশে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাইরে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার।
একইসাথে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল বন্ধের জন্যও প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করেছিল।
আরও পড়ুন : সংক্রমণ না কমলে লকডাউনে যেতে পারে মহারাষ্ট্র