প্রত্যয় ওয়েব ডেস্ক :
কোনও যাত্রীকে বিদেশে যেতে বা আসতে বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরে পাসপোর্ট ভিসা ও টিকিট দেখাতে হয়। করোনাকালে এই চেনা চিত্র খানিকটা বদলেছে। এখন এসবের সঙ্গে করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট ও ভ্যাকসিন কার্ড দেখাতে হয়। তারপরও সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে বা নিজ দেশে এসে ঢুকতে হয় কোয়ারেন্টিনের খাঁচায়। আগামীতে এসব কাগজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট, যা এই খাঁচায় ঢোকা থেকে রক্ষা করবে। বন্দর থেকে বেরিয়েই চলে যাওয়া যাবে নিজ গন্তব্যে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,ভ্যাকসিন পাসপোর্ট থাকলে পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিটের সঙ্গে আর কোনও কাগজ দেখাতে হবে না। কোয়ারেন্টিনেও থাকতে হবে না।ভ্যাকসিন পাসপোর্টই সব কাগজের সহায়ক হবে।
পলক বলেন, ‘আমরা আইসিটি বিভাগের প্রোগ্রামারদের বলেছি এটা নিয়ে কাজ করতে। কাজ এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের দিকেও আমরা লক্ষ্য রাখছি। কারা কীভাবে এটা তৈরি করে, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগতে পারে।’
ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কেমন হতে পারে জানতে চাইলে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে সবাই কার্ড পেয়েছি। ওই কার্ডে কিউআর কোড আছে। এখন আমরা ডাটাবেজ তৈরি করবো। ডাটাবেজ জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট দিয়ে যাতে ভেরিফাই করা যায়, সেই ব্যবস্থা থাকবে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার পরই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকা সার্টিফিকট পাওয়া যাবে। এটা না পেলে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট পাওয়া যাবে না। টিকা সার্টিফিকেটের অর্থ হলো— দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কার্ডটি কেমন হবে, সেটা এখনও পুরোপুরিভাবে বলা না গেলেও এটুকু বলতে পারি— এটার হার্ডকপি প্রিন্ট নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। মোবাইলে কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এটার (ভ্যাকসিন পাসপোর্ট) ডিজাইন, প্ল্যানিং আমরা করছি। এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। তাই প্রো-অ্যাক্টিভলি কাজটি আমরা করছি। তবে তার আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনুমোদন পেতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সকালে দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করে বলেছিলেন, টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট অটোমেটিক জেনারেটে হবে এবং আমরা একটা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য এরইমধ্যে আমাদের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
দেশে তথ্যপ্রযুক্তির গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রেনিউর ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি আরিফ নিজামী বলেন, ‘এটি স্মার্টকার্ডের মতো হতে পারে, হতে পারে কাগজে প্রিন্ট করা কোনও কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড। এটা এখনও কেউ করেনি বলে ঠিক অনুমান করা যাচ্ছে না। তবে এগুলোর মতো হওয়াই স্বাভাবিক, যৌক্তিক।’ তিনি জানান, অনেক দেশে এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। উন্নত দেশগুলো এরই মধ্যে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছে।
আরিফ নিজামী আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্টে ভ্যাকসিন গ্রহীতার ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ (প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ), তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা, আক্রান্ত হলে কবে হয়েছেন, সর্বশেষ কবে করোনা টেস্ট করে নেগেটিভ ফল পেয়েছেন ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ থাকতে পারে।’
ইউরোপীয় কমিশন এটিকে বলছে ডিজিটাল গ্রিন পাস বা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট। কমিশন বলছে, এই পাস থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত অবাধ হবে। এসব দেশ থেকে বাইরেও যাওয়া-আসা যাবে।সূত্র :বাংলা ট্রিবিউন।
আরও পড়ুন : দুই কোটি টাকা রেডি করেন, নইলে ক্রসফায়ার