আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আদালত বন্ধ বা খোলা রাখার এখতিয়ার প্রধান বিচারপতির হাতে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) করোনাভাইরাস পরিস্থিতে আদালতের কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আদালত বন্ধ বা আদালত খোলা রাখার যে এখতিয়ার সেটা প্রধান বিচারপতির, আমার নয়। কিন্তু আমার বিশ্বাস করোনাভাইরাসের তীব্রতা যদি কমে যায় তবে সেদিক বিবেচনা করে প্রধান বিচারপতি সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন, ‘খসরু সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৬৯ সাল থেকে। তখন তিনি ছাত্রলীগ করতেন। সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু সাহেব একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
‘তিনি পাঁচবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন তখন তাকে ছয় মাসের জন্য প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন। তারপর ’৯৭ সালের জানুয়ারিতে তাকে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী করা হয়েছিলো। ব্যক্তিগতভাবে তিনি আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধার। তিনি আমাকে স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সময় তিনি তখন মন্ত্রী ছিলেন, আমরা যেখানে কাজ করতাম, কাজ শেষ করে তিনি সন্ধ্যাবেলা আসতেন, আমাদের কাজ শেষ হলে তিনি বাড়ি ফিরতেন। ১৯৯৬ সালে ইনডেমনিটি অ্যার্ডিন্যান্স বাতিলের সময় জাতীয় সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা মনে রাখার মতো। সেদিন তিনি মানুষকে কাঁদিয়েছিলেন।’
রাজনৈতিক সহকর্মীর স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস ছিল। তিনি আইনজীবী হিসেবে একজন মেধাবী এবং অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান আইনজীবী ছিলেন। তার মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে একটা বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। আমি জানি না এই শূন্যতা পূরণ হবে কিনা। তার মৃত্যুতে আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে আবদুল মতিন খসরুর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিচারপতিসহ জানাজায় অংশ নেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
জানাজার আগে আবদুল মতিন খসরুর ছেলে আবদুল মুনায়েম ওয়াসিফ তারা বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জানাজা শেষে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের পক্ষ থেকে তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে, ডেপুটি স্পিকারের পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে মাহবুব উল আলম হানিফ, আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি,কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের আইন উপ কমিটি, আবদুল মতিন খসরু অ্যাসোসিয়েটস, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।