জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি: করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল। আজ, মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা আজ (মঙ্গলবার) সকাল আটটা থেকে হলে উঠতে পারবেন।
সকালে কয়েকটি আবাসিক হলে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে হলে ঢুকছেন। ফটকের ভেতর হল প্রাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র আছে কি না, তা যাচাই করে দেখছেন। মাপা হচ্ছে সবার শরীরের তাপমাত্রা।
কোনো হলে শিক্ষার্থীদের ফুল আবার কোথাও চকলেট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। সব হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধিসংবলিত প্রচারপত্র বিলি করা হয়।
শিক্ষার্থীদের বরণ করতে পেরে বেশ আনন্দিত হলের প্রাধ্যক্ষ ও হলের আবাসিক শিক্ষকরা। স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই হল খুলে দেওয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের বরণ করতে পেরে আমরা বেশ আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের কলরবে হল আবার সরব হয়ে উঠবে ক্যাম্পাস।
দেখা যায়, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসছেন, সঙ্গে আছে ট্রাংক, বাক্স ও ব্যাগে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র। প্রতিটি হলের সামনে সকাল আটটার আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করে। হলে ঢোকার পর ভেতরের চায়ের দোকানে আড্ডায় মেতে ওঠেন অনেকে।
হলের দেয়ালগুলো চুনকাম ছাড়াও প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজও শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হলগুলোতে ‘গণরুম’ বন্ধ রেখেছে।
হল পরিদর্শন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আজকে আমাদের জন্য খুব আনন্দের দিন। অনেকটা মনে হচ্ছে যেন ঈদের দিনের মতো।
তিনি আরও বলেন, এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা চলে আসায় শিক্ষকদের মধ্যেও একটা প্রাণ এসেছে, প্রশাসনের মধ্যে প্রাণ আসছে। সবার মনে আনন্দ এটা সবচেয়ে বড় দিক। এতোদিন যে স্থবিরতা ছিল, সেটার অবসান ঘটেছে। যত দ্রুত সম্ভব সব শিক্ষার্থীদের আমরা হলে নিয়ে আসতে পারি সেটাই লক্ষ্য। আজকের এই কর্মসূচি, আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনুপ্রেরণা দেবে।