1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

অনিয়ন্ত্রিত রাগ মারাত্মক ক্ষতিকারক : জসিম তালুকদার

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১
  • ৩২১ Time View

          অনিয়ন্ত্রিত রাগ মারাত্মক ক্ষতিকারক 

রাগ নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এক সাহাবি হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অল্প কথায় কিছু নসিহত করুন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। সাহাবি কয়েকবার বললেন, আরও নসিহত করুন।

প্রত্যেকবারই রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। -(বোখারি শরীফ)

রাগ মানবিক আবেগের অংশ বিশেষ।

তবে অনিয়ন্ত্রিত রাগ মারাত্মক ক্ষতিকারক। জ্ঞানীরা বলেন, রাগ হলো বারুদের গুদামের মতো।
আগুনের স্ফূলিঙ্গের ছোয়ায় সব কিছু ধ্বংস করে দিতে পারে এই রাগ। এ কারণে রাগ নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কোনো কোনো মানুষ দ্রুত রেগে যায় এবং তাদের রাগও প্রচন্ড। এমনকি মানুষ রেগে গিয়ে নানান ঘটনা হত্যা শুরু করতে পারে, মানুষের সঙ্গে মেলা মেশাও বাদ দিতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তিরা রাগের কারণে নানা দৈহিক রোগেও আক্রান্ত হতে পারে।

আরেক ধরনের লোক হলো এরকম যে, তারা ভারসাম্যপূর্ণ। বিবেক ও নৈতিক শিক্ষার ভিত্তিতে যৌক্তিক পন্থায় নিজেদের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত সাহসী ও আশাবাদী হয়। এই দুই ধরনের লোকদের বাইরেও আরেক দল আছে, যারা ভয়ের কারণে রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে না। বিষয় যেটাই হোক, এটা সত্য যে, নৈতিক শিক্ষা মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ হতে সাহায্য করে। এ কারণে মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে।

সাধারণত কোনো কারণ ছাড়া মানুষ ক্রুদ্ধ হয় না। এর মধ্যে কোনো কোনো কারণ গ্রহণযোগ্য, আবার কোনো কোনোটি অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক। ব্যর্থতা, অযৌক্তিক প্রত্যাশা, হিংসা-বিদ্বেষ ও অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ানোর মতো কিছু অভ্যাস ও ঘটনার পাশাপাশি অবিচার, জুলুম ও দারিদ্রের মতো সামাজিক অসঙ্গতিগুলো মানুষের রাগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে রাগ প্রকাশের ধরনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিভেদে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কিছু লোক আছে, একজনের ওপর রাগ পুষে রেখে অন্যের ওপর তার প্রকাশ ঘটায়। অনেকে আবার সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেখায়। কেউ কেউ আছেন, শত অন্যায়ের পরও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান না। এ ধরনের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ভালো নয়। তবে যারা রাগকে কৌশলে সংবরণ করে সেই শক্তিকে ভালো কাজে লাগাতে পারেন, তারাই প্রকৃত সফলকাম।

ইসলাম মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে। ইসলাম মনে করে, রাগ মানুষকে জ্ঞান, বিবেক ও ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত করে দেয়। রাগের কারণে মানুষের আচার-আচরণ ও চিন্তায়া খারাপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই রাগান্বিত অবস্থায় ক্ষমা করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। বিশেষ করে কোনো ব্যক্তি যদি প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা থাকার পরও প্রতিশোধ না নেয় এবং ক্ষমা করে দেয়, তাহলে তার এ কাজটি ইসলামের দৃষ্টিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।

ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায়, বড় বড় মনিষীরা ক্ষমা করার ক্ষেত্রে ছিলেন অগ্রগামী। তারা রাগান্বিত হলে সূরা আল ইমরানের ১৩৪ নম্বর আয়াতটি তেলাওয়াত করতেন। এ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘’যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ-ক্রটি মাফ করে দেয়। এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন।”

মহান ও আধ্যাত্মিক ভাবে পরিশুদ্ধ ব্যক্তিরা সব সময় অন্যের জন্য দোয়া করেন। মানুষকে সংশোধন করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানান। তাদের কথা হলো, কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধব আপনার ওপর রেগে থাকলে ক্ষুব্ধ লোকটির কাছে গিয়ে নম্রভাবে তাকে স্বান্তনা দিন, তার ক্ষোভ উপশমের ব্যবস্থা করুন, যাতে সে শান্ত হয়। এমনটি করলে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিটির ক্ষোভ কমবে, তার কোনো ক্ষতি করার পরিকল্পনা থাকলে তা থেকে সরে আসবে।

রাগ নিয়ে ইসলামের এমন অবস্থানের পরও কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষোভকে সঠিক বলে রায় দিয়েছে। সমাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জুলুম ও বৈষম্য দূর করা এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধী ও জুলুম বাজদের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাগ বৈধ। জাতীয়, ধর্মীয় ও মানবিক আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনে রাগকে কাজে লাগাতে হবে। তবে অন্যায় দমন করতে যেয়ে অন্যায়কে যাতে প্রশ্রয় না দেওয়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বস্তুত রাগ মানুষের জীবনকে সহজেই বিষাক্ত করে তুলতে পারে। রাগের মাথায় এমন সব কাজ ঘটে যাতে পারে- যা ব্যক্তি, সমাজ, দেশ, নিজের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ।

তাই রাগ হলে আলেমরা ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম’ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শোয়ে পড়ে। ’ -(তিরমিজি)

আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’ আর মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন।

লেখক:-
????–জসিম তালুকদার
সমন্বয়কারী, আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি দৈনিক প্রত্যয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..