1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

অসাংবিধানিক বক্তব্যের জন্য সেই বিচারককে শোকজ করা হবে

  • Update Time : রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৯৭ Time View

ওয়েব ডেস্ক: ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশকে মামলা না নেওয়ার পর্যবেক্ষণ দেওয়া বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের বক্তব্যকে অসাংবিধানিক ও বেআইনি হিসেবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির চিঠি পেলে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এরপর আইন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে।

রোববার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।

এর আগে রোববার (১৪ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিচারক কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ওই বিচারককে আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

এ সময় বিচারক কামরুন্নাহারের দেওয়া রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আইনমন্ত্রী।

ওই বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার সুপ্রিম কোর্টের চিঠি পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘না, আমি এখনও চিঠি পাইনি। আমি সকাল বেলা শুনলাম মাননীয় প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি বিজ্ঞ বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। আপনারা লিখেছেন ‌‌‌‘বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে’। কেড়ে নেওয়া কথাটার মানে হচ্ছে জোর করে কেড়ে নেওয়া। এটা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না। এ রকম যদি ঘটনা ঘটে মাননীয় প্রধান বিচারপতির এই ক্ষমতা আছে তাকে বিচারিক ক্ষমতা থেকে কিছুদিন সরিয়ে রাখার।’

তিনি বলেন, ‘বিচারিক কাজ থেকে তাকে যে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে, সেটাও মাননীয় প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিলে আমরা একটা জিও করব।’

‘প্রধান বিচারপতিকে আমি কিছু বলিনি। এটি (শাস্তিমূলক ব্যবস্থা) উনার (প্রধান বিচারপতি) সিদ্ধান্ত। উনি স্বপ্রণোদিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

আনিসুল হক বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিজ্ঞ বিচারকরা প্রতিদিনই কিন্তু রায় দেন। রায়ে কেউ সন্তুষ্ট হয়, কেউ অসন্তুষ্ট হয়। যারা অসন্তুষ্ট হন, আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, সংবিধান অনুযায়ী, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত হচ্ছে আপিল বিভাগ। সেই আপিল বিভাগের সাংবিধানিক কিছু বাড়তি ক্ষমতাও আছে। সেগুলো তারা প্রয়োগ করেন। রায় দিলেই যে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নয়। তারা মেরিটের উপরে, আইনের উপরে, রায় দেয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন।’

‘কিন্তু এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা হচ্ছে একজন বিজ্ঞ বিচারক তিনি ওপেন কোর্টে রায় দেয়ার সময় তার পর্যবেক্ষণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর কেউ যদি কোনো ধর্ষণ মামলা করতে আসে, তাহলে সেই মামলাটা গ্রহণ না করতে। এটাই হচ্ছে আপত্তির জায়গা।’

আনিসুল হক বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে কোনো ফৌজদারি অপরাধের মামলা করার ব্যাপারে তামাদি বারিত হয় না (নট বার বাই লিমিটেশন)। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর কিন্তু মামলা হয়নি। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর এই মামলার প্রথম এফআইআর হয়। সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা আছে, একমাত্র আইন দিয়ে বাংলাদেশের একজন নাগরিকের বিরুদ্ধে বা পক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকের বক্তব্যটি সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। এই দুটোই তিনি ভায়োলেট (লঙ্ঘন) করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই ভায়োলেশনের তাৎপর্যটা কী? অনেক রায় আছে বেআইনি হয়, আপিল বিভাগে গিয়ে স্যাটেসাইড হয়। এখানে তিনি যে কথাটা বলেছেন, সেটার একটা ইপ্লিকেশন আছে, একটা কনসিকোয়েন্স আছে। এ কারণেই আজকে বিচার বিভাগের যিনি গার্ডিয়ান, যিনি প্রধান তাকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ঠিক সেই কারণেই আমি আইনমন্ত্রী হিসেবে নির্বাহী বিভাগ থেকে গতকাল বলেছিলাম, আমি প্রধান বিচারপতির কাছেই বিচার চাইতে পারি। কারণ বিচার বিভাগ স্বাধীন।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় যে, এটা বিজ্ঞ বিচারকদের জন্য বিব্রতকর। এটা একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল, সেজন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে কিন্তু এগিয়ে যাবে।’

‘আইনে তার যা সুবিধা…তাকে শোকজ করা হবে। তিনি কেন বলেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেটা আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেয়া আছে, সেটাই তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।’

প্রধান বিচারপতি এই শোকজ পাঠাবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই শোকজ যখন আমাদের কাছে পাঠনো হবে। এটা আমরা তার কাছে পৌঁছে দেব।’

বিচারকের পর্যবেক্ষণের কারণে কোনো ভুল ম্যাসেজ যাবে কি না- এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বা নির্বাহী বিভাগ যদি বিচারকের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তাদের বক্তব্য পরিষ্কার না করতো, বিচার বিভাগ যদি পদক্ষেপ না নিত, তাহলে রং ম্যাসেজ হয়তো যেত। কিন্তু এই পদক্ষেপ নেওয়ার পর আমার মনে হয় না রং ম্যাসেজ যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে।’

বিচারকের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিজ্ঞ বিচারকদের সঙ্গে কথা বলি না। উনার ডিফেন্স উনি নেবেন। সবকিছু নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে।’

গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) একটি ধর্ষণ মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, মামলার দুই ভিকটিম আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত। তারা স্বেচ্ছায় হোটেলে গেছেন। সেখানে গিয়ে সুইমিং করেছেন। ঘটনার ৩৮ দিন পর তারা বললেন, ‘আমরা ধর্ষণের শিকার হয়েছি।’ অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায় তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..