1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

আপনার সন্তান যেন মানুষ হয় মানবিক হয়ে, অমানুষিক চাপ নিয়ে নয়

  • Update Time : সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১
  • ২৭৪ Time View

আপনার সন্তান যেন মানুষ হয় মানবিক হয়ে, অমানুষিক চাপ নিয়ে নয়

প্রত্যেক মা-বাবা চায় তার সন্তান যেন মানুষের মত মানুষ হয়। শিক্ষিত হোক, হোক সৎ, ধার্মিক ও মার্জিত চরিত্রের অধিকারী। তবে এ ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা পাওয়া যায় আর্থিক বিবেচনার উপর নির্ভর করে। যেমন- যাদের টাকা পর্যাপ্ত আছে তারা স্কুলে ইংরেজী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেন। আর যাদের অর্থাভাব রয়েছে তারা মাদ্রাসা বা ইসলামী শিক্ষায় গুরুত্ব দেন। প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কি ইংরেজী শিক্ষার আগ্রহীরা ইসলাম হতে দূরে থাকতে চায়? না, এমনটা ভাবার কোনো যৌক্তিক কারন নাই। তবে অর্থের একটা যৌক্তিক দিক আছে। ইংরেজী শিক্ষায় খরচ বেশী। যেটা সাধারণ ও গরীব পরিবার নিয়মিত বহন করতে পারে না। আর মাদ্রাসা শিক্ষায় সবচেয়ে খরচ কম। এমনকি এতিম ও অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা মাদ্রাসাও রয়েছে যেখানে নূন্যতম খরচ অথবা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় শিক্ষাদান করানো হয়। এজন্য আমাদের দেশে বিশেষ করে গরীব, অসহায় ও এতিম সন্তানকে মাদ্রাসায় পড়ানোর আগ্রহটা বেশী থাকে।

এবার আসি মূল কথায়- আপনি গরীব, অসহায় কিন্তু সন্তানকে শিক্ষিত করার প্রবল আগ্রহ আপনার আছে। সে হিসেবে আপনি আপনার সন্তানকে মাদ্রাসা বোর্ডিং এ দিয়ে দিতে চান। ভালো কথা। তবে কখনো ভাবছেন কি আপনার সন্তান আপনাকে ছাড়া বোর্ডিংএ থাকতে পারবে কিনা? সন্তান কতটা মানসিক ও শারিরিক চাপ বহন করার শক্তি সামর্থ রাখে? মাদ্রাসার শিক্ষকগণ কতটা বাচ্চা প্রিয় মানে আদুরে ও মমতাবাণ এবং মাদ্রাসাটি আপনার নিয়মিত যোগাযোগের দূরত্বের মধ্যে পড়ে কি না? যদি এসব না ভেবেই আপনার সন্তানকে বোর্ডিংএ দিয়ে দেন তবে আপনার সন্তান মানুষ হবার চেয়ে মানসিক অবক্ষয়ের মধ্যেই বড় হতে থাকবে।

অনেকেই আমার কথায় বিরক্তবোধ করতে পারেন। ধারণা করতে পারেন আমি কি তবে মাদ্রাসায় পড়ার প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশ করছি? না, এমনটি ভেবে থাকলে সেটি আপনার ভূল ধারণা হবে।

প্রশ্ন আসতে পারে তবে আমার এসব কথার মানে কি এবং কেন?
তাহলে শোনুন- বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায় মাদ্রাসা হতে বাড়ি যাবার পথে বা বাড়ি হতে মাদ্রাসা যাবার পথে ছাত্র নিখোঁজ, অথবা মাদ্রাসা হতে দোকানে গিয়ে আর মাদ্রাসা বা বাড়িতে ফেরেনি ছাত্র, অথবা মাদ্রাসার শিক্ষক দ্বারা ছাত্রকে পিটিয়ে জখম বা লাঞ্চিত।

এসব ঘটনা যখন দেখি বা পড়ি তখন বুকের ভিতর মোঁচড় দিয়ে উঠে। সন্তানকে মানুষ করতে দিয়ে সন্তান হারানো অথবা অমানুষিক নির্যাতনের দিকে ঠেলে দেয়া? এমনটা কি ভাবা যায়? আর এ সন্তান যখন বড় হবে তখন সে কতটা মানবিক হবে তাও কি ভাবা যায়? অর্থাভাব বলে কি সন্তানকে এমন অবস্থায় চাপ প্রয়োগে বোর্ডিং রাখতে হবে? কেনো, বাসা হতে আসা যাওয়া করে কি সন্তান মাদ্রাসায় পড়তে পারেনা? এমন হাজারো প্রশ্ন আসবে একজন সচেতন ব্যক্তির মনে।

তবে, মনে রাখতে হবে যে সন্তান পিতা-মাতার আদর সোহাগ হতে শিশুকালে বঞ্চিত হয় সে সন্তান বড় হয়ে পিতা-মাতার প্রতিও অনাগ্রহী ও নির্দয় হয়। পাশাপাশি তার সন্তানের প্রতিও মমতাহীন হয়।

এবার বলি শোনুন – আপনার সন্তান ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হবে এটা গর্বের বিষয়। অর্থাভাবে বোর্ডিংএ দিয়ে হলেও পড়াশোনা করিয়ে মানুষ বানাবেন এটাও আনন্দের বিষয়। তবে এ ক্ষেত্রে যদি আপনি বিবেচক না হয়ে অবিবেচকের মত সিদ্ধান্ত নেন তবে আপনার সন্তান কতটা মানুষ ও মানবিক হবে সেটাও প্রশ্নের বিষয়। আর এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে বলে আমি মনে করি-

১ঃ আপনার সন্তান আপনাকে/ পরিবার ছাড়া থাকার মত মানসিক প্রস্তুত কি না তা বুঝতে হবে। পড়াশোনা ও শাসনের চাপ সহ্য করার মত কি না তা জানতে হবে। না হলে যখন বুঝ হবে, পরিবার ছাড়া থাকতে পারবে তখন বোর্ডিং এ দিবেন।

২ঃ পরিবারের অন্য শিশুদের সাথে মিশুক কি না তা জানতে হবে, কারন বোর্ডিংএ অন্য ছাত্রদের সাথে মিশে চলার মানসিকতা থাকতে হবে। না হলে বাড়িতে অন্য শিশুদের সাথে মিশে চলার অভ্যাস করতে হবে।

৩ঃ মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি বিনোদনের কতটা সময় ও ব্যাবস্থা আছে তা জানতে হবে। শুধুমাত্র পড়াশোনার চাপ সন্তানের ব্রেনকে সংকুচিত করে দিতে পারে।

৪ঃ প্রতিদিন ফজরের সময় উঠে নামাজের অভ্যাস করতে হবে, মসজিদে ফোরকানিয়ায় যেতে অভ্যাস করতে হবে। তবেই সে বোর্ডিং এ ফজরকালে উঠতে পারবে।

৫ঃ এ বিষয়টি সবচেয়ে বেশী গুরুত্বসহকারে নিতে হবে। আপনার পছন্দের মাদ্রাসার হুজুরের আচরণ কেমন, শিক্ষার্থীদের প্রতি অত্যাচারী কি না আদুরে স্বভাবের এসব বিষয়ে খোঁজ নেয়া শতভাগ জরুরী। পড়াশোনা এক বছর পিছে হলে সমস্যা নাই তবে অত্যাচারী হুজুর হলে সন্তানকে অমানবিক শাসনের মাধ্যমে পড়ানোর চেষ্টা করবে এবং সন্তান মাদ্রাসা হতে পালানোর পথ খুঁজবে ও হারিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকবে।

৬ঃ দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মাদ্রাসাটি আপনার দৈনিক যোগাযোগ রাখার মত দুরত্বে কি না। কারন আপনি যদি দৈনিক একটা সময় করে সন্তানের সাথে দেখা করেন এবং আদর স্নেহ দিয়ে আসেন, খোঁজ খবর রাখেন, বাড়িতে ভাল মন্দ খাবার পাক করে সন্তানকে খাইয়ে আসেন তবে সন্তান কষ্ট হলেও মাদ্রাসায় থাকবে তবুও পালাবে না। সন্তান জানে আগামীকাল বা একদিন পর সে তার মা বাবাকে দেখতে পাবে। বাড়িতে অনুষ্ঠান হলে যোগ দিয়ে আনন্দ করতে সুযোগ পাবে।

আপনি যদি এ বিষয়গুলো খেয়াল রেখে সন্তানকে মাদ্রাসায় দেন তবে আপনার সন্তান ইনশা আল্লাহ মানবিক ও ধর্মভীরু দুটোই হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে – যে সন্তান আজ অমানুষিক চাপের মধ্য দিয়ে বড় হবে সে সন্তান মানবিক না হয়ে নিজেও তেমন নির্দয় ও অত্যাচারী হবে। তাই বলি –
আপনার সন্তান যেন মানুষ হয় মানবিক হয়ে, অমানুষিক চাপ নিয়ে নয়।

লেখক-
এম. শরীফ হোসেন
মানবাধিকার ও সংবাদকর্মী, সদস্য মাধবদী থানা প্রেস ক্লাব।
সাংগঠনিক সম্পাদক- হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি (মাধবদী থানা শাখা)।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..