বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
ওয়েব ডেস্ক রিপোর্ট : আচ্চা টিকা বা ভেকসিন আবিষ্কারের কতদূর কি হলো ? গতকাল রাতে সেটাই ভাবছিলাম, তাই অনলাইনে কিছু ঘাটাঘাটি শেষে এই লেখা শুরু করেছি।
আমি জানি, পৃথিবী ধ্বংসের দিনেও আমরা হয়তো আরও আধুনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি, পারমানবিক মরনাস্ত্র আর ভয়াবহ জীবানু অস্র নিয়ে ব্যস্ত থাকবো। এদিকে ইউরোপের ভবিষ্যত অনিশ্চিত , ইতালি ও ফ্রান্সের তোলা ইউরো বন্ডের দাবী জার্মানী ও হল্যান্ড নাকোচ করে দেয়ায় পারস্পরিক সম্পর্ক দূর্বল হয়ে পড়েছে। পৃথিবী জোড়েই শুরু হয়ে গেছে ইয়া নফসি, ইয়া নফসি! চাচা আপন প্রাণ বাঁচা বলে কথা!
করোনা ভাইরাস(Covid 19) মানুষের ফুসফুসকে আক্রান্ত করলেও ধিরে ধিরে শরিরের অন্যান্য অর্গানের ফাংকশনালিটিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে যেমন লিবার ও কিডনিকে অকেজো করে দিতে পারে।একইসাথে রোগির কিডনি, লিভার ইত্যাদির কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘মাল্টি অর্গান ফেইলিউর’ বলে যা আক্রান্ত মানুষটিকে অবলীলায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
করোনা চিকিৎসায় ডাক্তাররা যে বড়ো অনিশ্চিয়তা মোকাবিলা করেন সেটা হলো চিকিত্সাধীন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না তার শরিরের ইমমিউন সিস্টেমের ওভার রি-একশানের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেটা যাচাই করতে না পারা।
আরো জানলাম,রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে চীন। এ পদ্ধতিতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে গেছেন এমন ব্যক্তির দেহ থেকে রক্তের প্লাজমা সংগ্রহ করে নতুন আক্রান্তদের দেহে সেই প্লাজমা ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে ফার্মাসিউটিকল এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলিও ভেকসিন আবিষ্কার করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে।
এই তালিকার একটি আশ্চর্যজনক নাম ফুজিফিল্ম।সম্প্রতি এক সংবাদে প্রকাশ পেয়েছে যে জাপানি প্রতিষ্ঠান ফুজিফিল্মের স্বাস্থ্যসেবা সহায়ক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কয়েক দশকের পুরাতন ফ্লু ড্রাগ অ্যাভিগান করোনা ভাইরাস রোগীদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে কার্যকর হতে পারে। জাপান সরকারের ভান্ডারে মজুত রয়েছে দুই মিলিয়ন মানুষের চিকিত্সার জন্য যথেষ্ট অ্যাভিগান ড্রাগ।
আশার কথা হলো, একটি COVID-19 ভ্যাকসিনের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শীর্ষস্থানীয় সংস্হা হলো মোদারনা থেরাপিউটিক্স যারা এম আর এন এ ১২৭৩ নামক ভেকসিন প্রস্তুত করেছে, এই ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত দ্রুততার সাথে পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে, এমনকি এটি প্রাণীতে পরীক্ষা করার আগেই সরাসরি মানবিক পরীক্ষায় একজন মহিলার উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। ওয়াশিংটন স্টেটে বর্তমানে চলমান পরীক্ষাগুলির সাথে যদি সব কিছু ঠিকঠাক হয় তবে সংস্থাটি আশা করছে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ভ্যাকসিনের প্রাথমিক সংস্করণ প্রস্তুত থাকবে। ভ্যাকসিনের প্রাথমিক সংস্করণগুলি ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী যেমন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জন্য ব্যবহৃত হবে।
আজ ইতালীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৭০ জন।নতুন করে আক্রান্ত ৩,৯৫১ জন।সুস্থ হয়েছেন মোট ৩০,৪৫৫ জন।গুরুতর অসুস্থ আছেন ৩,৪৯৭ জন।চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৯৮,২৭৩ জন।মোট মৃত্যু হয়েছে ১৮,৮৪৯জনের। সর্বমোট ইতালীতে আক্রান্ত ১,৪৭,৫৭৭ জন।বাংলাদেশের খবর ত আপনাদের জানাই আছে,আজকে নাহয় নাই বললাম।
দুর্ভাগ্যক্রমে, এই মহামারী সমাধানের জন্য আপাতত কোন মিরাকল নেই, তাই অপেক্ষা করা আর প্রতিরোধমূলক সাবধানতা অবলম্বন করাই এখন একমাত্র অপশন, কথায় আছে-
Prevention is better than cure!
আমরা কেবল আশা করতে পারি যে কভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে খুব তাড়াতাড়ি যেন মানুষের জয় হয়!
১১/০৪/২০২০
মিলান, ইতালী।
তথ্যসূত্র – WHO, FDA, লা রিপাবলিকা, মাইক্রোবায়োলজী রিসার্চ ডট অরগ।