সৌদি আরব ও আরব আমিরাতসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ থেকে গত আট মাসে তিন লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৪৮৪ জন পুরুষ ও ৩৯ হাজার ২৭৪ জন নারী।
এদের মধ্যে ৫৬ শতাংশেরও বেশি কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছেন। এপ্রিল থেকে নভেম্বর এই আট মাসে তারা দেশে ফিরেছেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে কিংবা চাকরি মেয়াদ শেষ হওয়ায় অধিকাংশ কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। এছাড়া কেউ কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউট পাসের মাধ্যমে কিংবা ভিসার মেয়াদ না থাকায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফিরে এসেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২৮টি দেশের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি ৯৮ হাজার ৬৮৭ জন ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ৩৭১ জন ও নারী ১৭ হাজার ৩১৬ জন। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরেছেন ৮৭ হাজার ৫২৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ১২৮ জন ও নারী আট হাজার ৩৯৭ জন।
মালদ্বীপ থেকে ফিরেছেন ১৪ হাজার ২২৩ জন। পর্যটননির্ভর দেশ হওয়ায় করোনাভাইরাসের কারণে দেশটিতে কাজ নেই। তাই মালিক বা কোম্পানি তাদের ফেরত পাঠিয়েছে।
সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত এসেছেন ৬ হাজার ৩৪৪ জন। কাজের বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ওমান থেকে ফেরত এসেছেন ১৮ হাজার ৯৫১ জন। তারা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউট পাসের মাধ্যমে দেশে ফেরেন।
কুয়েত থেকে ১৩ হাজার ৪২৬ জন ফেরত আসেন। আকামা বা ভিসার মেয়াদ না থাকায় বা অবৈধ হওয়ায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় তারা ফেরত আসেন। আবার অনেক কর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন।
বাহরাইন থেকে ফিরে এসেছেন দুই হাজার ৬৩৫ জন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউট পাশ নিয়ে ফিরলেও অনেকেই অসুস্থ হয়ে ও চাকরি হারিয়ে ফেরত আসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরত এসেছেন ৭১ জন। তাদের সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই দেশে ফিরে এসেছেন তারা।
কাতার থেকে ফেরত এসেছেন ১৪ হাজার ৯১১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে এসেছেন ৩৬ হাজার ৬৯৫ জন। কাজ নেই তাই ফিরে এসেছেন তারা।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ২২০ জন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা দেশে ফিরে আসেন।
এছাড়া থাইল্যান্ড থেকে ৮৯ জন, মিয়ানমার থেকে ৩৯ জন ফিরে এসেছেন। কাজ না থাকায় তাদের সবাই ফিরে এসেছেন।
জর্ডান থেকে ফেরত এসেছেন দুই হাজার ৩২৯ জন। তাদের সবাই গার্মেন্টস শ্রমিক। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফিরে এসেছেন তারা।
ভিয়েতনাম থেকে ফেরত এসেছেন ১২১ জন। তাদের সবাই পুরুষ। প্রতারিত হয়ে ফেরত এসেছেন তারা।
কম্বোডিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০৬ জন। সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা।
ইতালি থেকে ফেরত এসেছেন ১৫১ জন। তাদের সবাই পুরুষ। গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ১৫১ জন বাংলাদেশি কর্মীকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। পরে সবাইকে সেনাবাহিনীর অধীন কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়।
এছাড়া ইরাক থেকে ফেরত এসেছেন ১০ হাজার ১৬৯ জন, শ্রীলঙ্কা থেকে ৫৭৪ জন, মরিশাস থেকে ৪৫২ জন, রাশিয়া থেকে ১০০ জন এবং তুরস্ক থেকে ফেরত এসেছেন ১২ হাজার প্রবাসী।