কবির হোসেন মিজি, চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ চাঁদপুর সদর উপজেলার মদনা গ্রামে ৩ কিশোরীকে কোল্ড্রিংসের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগে অচেতন অবস্থায় তার সহকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ১১ অক্টোবর রোববার রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষির মদনা গ্রামের বরকন্দাজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত তিন কিশোরী দক্ষিণ বদনা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী। এদের ৩ জনের মধ্যে দুজনের বয়স ১৩ বছর আরেকজনের বয়স ১৪ বছর।
নির্যাতিত দুই কিশোরীর মাতা জানান, তার স্বামীর ব্যবসায়ী কাজের তাগিদে তিনি শুক্রবার দিন তার দুই মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ঢাকায় যান। তারা ঐদিন পার্শ্ববর্তী ঘরের অন্য এক কিশোরকে (বান্ধবী) নিয়ে ঘরে একা থাকছিল। রোববার দিন সন্ধ্যায় একই বাড়ির বাচ্চু মিরের ছেলে মিলন বরকন্দাজ ওই ঘরে গিয়ে তাদেরকে মুড়ি চানাচুর খাওয়ার কথা বলেন এবং সে দোকান থেকে মুড়ি চানাচুর এবং কোকের বোতল নিয়ে তাদের ঘরে যান। এ সময় মিলন অসৎ উদ্দেশ্যে ওই পানিয় ড্রিংসের সাথে ঘুমের কিংবা নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে দেন। তিনি আরো জানান ঐদিন মিলন তাদের ঘরে সিঁধ কাটেন এবং ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরদিন ভোর বেলা পার্শ্ববর্তী এক বৃদ্ধ নারী তাদের ঘরের সিঁধকাটা দেখে চিৎকার চেচামেচি করলে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে দেখেন যে তাদের ঘরে সিঁধকাটা রয়েছে। এবং ওই সিঁধের ভেতর দিয়ে এক শিশুকে দিয়ে ঘরের দরজা খুলে দেখেন ওই তিন কিশোরী গায়ের পোশাক সহ তারা এলোমেলোভাবে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে তারা তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
তাদের অভিযোগ বখাটে মিলন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এই কৌশল করে তাদেরকে ধর্ষণ করেছেন।
এদিকে এমন ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিন ও পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) হারুনুর রশিদসহ পুলিশ সদস্যরা চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে খোঁজ খবর নেন।
এ বিষয়ে ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আমার ওয়ার্ড মেম্বারের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। তারপর আমি চাঁদপুর মডেল থানার ওসি তদন্ত কে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন হয়তো বা তারা খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন পাশাপাশি আমরা আমাদের মতো খোঁজখবর নিবো।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিন বলেন, আমরাও এমন কিছু একটা ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছি এবং তাদের কাছ থেকে খোঁজখবর নিচ্ছি বাকিটা তদন্তের পর আসল ঘটনা সম্পর্কে জানা যাবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আসিবুল আহসান চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যে তিন কিশোরীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ এর নিচে। তারা তিন জনেই ঘুমের কিংবা নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তাদের অভিবাবকরা আমাদের কাছে এমন কোন ঘটনার কথা বলনি। যদি এমন কিছু ঘটনার অভিযোগ থাকে তাহলে হয়ত আমরা তাদেরকে মেডিকেল চেকআপ করাবো। তারপর প্রকৃত সত্যটা জানা যাবে।
এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..