নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা: করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির লাগাম টানতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় আগের মতো পুরো জেলা লকডাউন করা হবে না। সংক্রমণের হার বিবেচনায় নিয়ে তিনটি এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হলো। আমলা পাড়া, জামতলা এলাকার আব্দুল হামিদ সড়ক ও রূপায়ন টাউন এলাকা রোববার থেকে লকডাউন থাকবে। সর্বনিম্ন ১৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ২১ দিন এসব এলাকা লকডাউন থাকবে।
জেলা প্রশাসক জানান, লকডাউন চলাকালীন এসব এলাকার মানুষ বাইরে বের হতে পারেবন না, আবার কেউ এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। লকডাউন এলাকার মানুষের খাবার এবং ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করা হবে।
এবার আগের মতো একযোগে সারাদেশ লকডাউন করা হবে না। সংক্রমণের হার বিবেচনায় নিয়ে পাড়া, মহল্লা, ওয়ার্ড ও এলাকাভিত্তিক সারাদেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন- এই তিন জোনে ভাগ করে লকডাউন করা হবে। কক্সবাজারকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করে ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পরই স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লকডাউন প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্নেষণ করে রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো সমন্বয় করার কাজ চলছে। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরই এটি কার্যকরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সারাদেশে রেডজোন এলাকাগুলোতে ২১ দিন লকডাউন কার্যকর করার চিন্তাভাবনা চলছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এই রেডজোনের কোনো মানুষকে বের হতে দেওয়া হবে না। আবার অন্য মানুষকে এই জোনে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এবার ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র বলছে, প্রথমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় আজ রোববার অথবা সোমবার থেকে লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে। ঢাকার বাইরে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সিদ্ধান্তটি কার্যকরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ঢাকার মধ্যে রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথমে লকডাউন কার্যকর করা হতে পারে। এই দুই এলাকাকে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।