বরিশাল প্রতিনিধি: একের পর এক চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন অভিযোগের পরেও এতদিন ঘুরে ফিরছিল বরিশালের দুই পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগও উঠে। অবশেষে ক্ষমতার অপব্যহারে প্রমাণ মেলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হল। এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় থেকে এই আদেশ দেওয়া হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী কমিশনার মো. রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার বলেন- নির্ধারিত এলাকার বাইরে গিয়ে তারা দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। যা বিভাগীয় তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি জানান। সাময়িক বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির আহম্মেদ ও সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শরিফুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ হচ্ছে, ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে বরিশাল সদর উপজেলার বুখাইনগর গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় দলিল লেখক রিয়াজ হত্যা মামলায় বশির আহম্মেদ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিহতের স্ত্রী লিজা আক্তারকে ফাঁসিয়ে দিতে জবরদস্তিমূলক স্বীকারোক্তি নেন। তার সাথে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এএসআই শরিফুল ইসলাম শরিফ একত্রিত হয়ে লিজাকে আদালতে উপস্থিত করেছিলেন।
এই জবানবন্দি এবং মামলা তদন্ত নিয়ে শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সন্দেহ হলে অন্যদিকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলা তদন্তে মাঠে নামলে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করলে বেড়িয়ে হত্যার আসল রহস্য। সেক্ষেত্রে নিহতের স্ত্রী লিজাকে ফাঁসিয়ে দিয়ে তদন্তে গাফিলতির বিষয়টি সামনে আসে।
এই ঘটনাসহ আরও বেশকিছু অভিযোগ ওঠে বশির ও শরিফের বিরুদ্ধে। সঙ্গত কারণে মেট্রো কমিশনার তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই তদন্তে প্রাথমিকভাবে বশির ও শরিফের বিরুদ্ধে ওই হত্যাকান্ড নিয়ে বাণিজ্য এবং বেশকিছু অভিযোগের প্রমাণ মেলে। অত:পর সোমবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পদক্ষেপ হিসেবে বরখাস্ত করা হয়।