পশ্চিমবঙ্গ সংবাদদাতা:বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে মামলায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত জানিয়েছে, এই ঘটনা পরিকল্পিত ছিল না। সেই সঙ্গে লালকৃষ্ণ আদবানি–সহ ৩২ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে। সারা ভারতেই এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে। বিজেপি এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠন যখন এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে, তখন বিরোধী বেশ কয়েকটি দল ও সংগঠন এই রায় মানতে পারেনি। শুধু তাই নয়, মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করবে বলেও জানিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবাংলার রাজনৈতিক মহলেও এই রায় বেশ প্রভাব ফেলেছে। যদিও শাসক দল তৃণমূল এবং দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম এবং কংগ্রেসের অধীর চৌধুরি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি এ দিন বেশ চাঁছাছোলা ভাষায় বলেন, ‘আমার বেশ অবাক লাগছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের প্রধান প্রধান নেতাদের আচরণ দেখে। তাঁরা তো এর আগে কথায় কথায় টুইট করতেন। যে কোনও বিষয়েই প্রতিক্রিয়া দিতেন। সব বিষয়েই তাঁরা মতামত দিতেন। তা তাঁরা কি আজ সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের রায় সম্পর্কে কিছুই জানেন না? তাঁদের জেনে রাখা উচিত, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ৩২ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। তাঁরা কি আজ সারাদিনের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছেন?’
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের হাথরাস ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। কিন্তু বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এমনকী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন প্রায় দিনই যে কোনও বিষয়ে টুইট করে থাকেন। এদিন কিন্তু বাবরি মামলার রায় নিয়ে টুইট মারফত তাঁরা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। আর এই বিষয়টি নিয়েই সরব হয়েছেন অধীর চৌধুরি। তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছি তৃণমূল মোটেও ধর্মনিরপেক্ষ দল নয়। তারা নিজেদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে। আগে তো বিজেপির সঙ্গে তারাই জোট বেঁধেছিল। পরে তাদের ছেড়ে ভোটে জিততে কংগ্রেসের হাত ধরেছিল। এখনও নানা সমস্যায়, বিপদে পড়লে বিজেপিকে দরকার পড়ে তৃণমূলের। তা ছাড়া, আজ বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করলে হিন্দুরা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। তাই তারা চুপ করে রয়েছে।’
শুধু অধীর চৌধুরিই নন, মুখ খুলেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিমও। তিনিও পরিষ্কার বলেছেন, ‘আসলে আরএসএসের কোনও নির্দেশ আসেনি। নাগপুরের আরএসএস সদর দফতর থেকে নির্দেশ আসলেই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া দিতেন।’ বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে আগাগোড়াই গোপন সমঝোতা রয়েছে বলে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে এসেছে বাম দলগুলি। তাই এদিন বাবরি প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল এবং দলনেত্রীকে খোঁচা দিতে বিন্দুমাত্র দেরি করেনি তারা।