প্রত্যয় প্রবাস ডেস্ক : ছোটবেলা থেকেই পাখির শখ ব্রিটিশ বাংলাদেশি তরুণী মিয়া রোজ-এর। বয়স ২০’র কোঠায় পৌঁছানোর আগেই তার দেখা হয়ে গেছে দুনিয়ার নানা প্রজাতির পাঁচ হাজারের বেশি পাখি। প্রকৃতিপ্রেমী এই তরুণ সংগঠক ও লেখককে সম্প্রতি বিজ্ঞানে সন্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রীতে ভূষিত করেছে ব্রিটেনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে ওই ডিগ্রী পাওয়া এই পাখিকন্যা নিজের বাংলাদেশি শেকড় ভুলে যাননি।
বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের দূত হিসেবে কাজ করছেন পাখি বিশারদ মিয়া রোজ। পাখির প্রতি আকর্ষণ তৈরি হওয়ার স্মৃতি আর অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে। ১১ বছর বয়সেই তার এই আকর্ষণ শুরু হয়। মা-বাবা ও বড় বোন আয়েশার সঙ্গে পাখি দেখতে বিভিন্ন স্থানে চলে যেতেন। সেই সময়েই প্রতিষ্ঠা করেন বার্ডগার্ল ইউকে নামে নিজের একটি ব্লগ। ৪০ লাখের বেশিবার তার ব্লগটি দেখা হয়েছে।
রোজ জানান, তার যখন ১৩ বছর বয়স তখন বড় বোন আয়েশা নিজের শিশুসন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে তিনি অন্য তরুণ প্রকৃতিবিদ সঙ্গী খোঁজা শুরু করেন। তা করতে গিয়েই অনলাইনে তার চোখে পড়ে আমেরিকান বার্ডিং অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম। সেখানে তারা তরুণদের পাখি দেখার জন্য গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল। এই কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পর নিজের মতো করে কিছু একটা করতে চাইলে বাবা-মায়ের কাছে অনুপ্রেরণা পান।
রোজ জানান, যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশি কিংবা নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পাখিপ্রেমীদের কার্যক্রম চোখে পড়ে না। সেই ভাবনা থেকে তিনি শুরু করেন ‘ব্লাক টু নেচার’ নামের একটি সংগঠনের কার্যক্রম। অলাভজনক এ সংগঠনটি বাংলাদেশিসহ যুক্তরাজ্যের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর তরুণদের পাখি দেখার ক্যাম্পসহ নানা আয়োজন করছে।
‘ব্লাক টু নেচার’ এখন পর্যন্ত নয়টি ইভেন্ট আয়োজন করেছে। এসব আয়োজনে বাংলাদেশিসহ তিনশ’ জন ভিএমই (ভিজিবল মাইনোরিটি এথনিক) শিশু কিশোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
রোজ এ প্রতিবেদককে জানান এই বছর নিজের এ লেভেল শেষ করেছেন তিনি। তার স্বপ্ন, বিশ্বজুড়ে জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা। বাংলাদেশি শেকড়ের পরিচয় নিয়ে গর্বিত এই তরুণ পাখি বিশারদ। তার পূর্বসূরীরা সিলেট থেকে ব্রিটেনে স্থায়ী হয়েছেন।