নিজস্ব প্রতিবেদক: রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদ ও পাহাড় খেটে দুষন এবং দখলের প্রতিযোগিতা থামছে না । যত্রতত্র দখল ও দুষনের কারণে পর্যাটন শহর পরিবেশ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে ।
দখলের প্রতিযোগিতায় প্রধান সড়কের দুইপাশ্বে টার্মিনালসহ সরকারি-বেসরকারী কোথাও বাদ পড়েনি । ১৯৬০ সালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই বাধ দেয়া হলে ৭২৫ বর্গকিলোমিটার দৈর্ঘ্য কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি হয় । বর্জ্য ফেলে হ্রদের নাব্যতা কমে গিয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও নেই কোন ড্রেজিং করার পরিকল্পনা । ক্রমন্বয়ে দখলের প্রতিযোগিতায় শীর্ষে রাঙামাটি এসব উচ্ছেদের কারো মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসানের। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া যাবে কিনা- দলীয় নেতাদের কাছে অসহায়ত্ববোধ করলেও বক্তব্য পাওয়ানি।
এইদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম কাপ্তাই লেকে জরিপ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কাপ্তাই লেকে মাটি ভরাট,দখল, ড্যাম,স্থাপনা অবকাঠামো যেন আর নির্মাণ না হয় সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন প্রতিষ্টান বা সংস্থা কার্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়া দেখা যায়নি।
এই আদেশ বাস্তবায়ন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, রাঙামাটি সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙামাটির সদর পৌরসভার মেয়র, বাংলাদেশ ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক, রাঙামাটি সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি), রাঙামাটির কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। কাপ্তাই লেকের মধ্যে নির্মিত সকল অবকাঠামো স্থাপনা, ড্যাম ধ্বংস, উচ্ছেদে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং কাপ্তাই লেকের সকল ধরনের দখল, ভরাট,ড্যাম, স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা অপসারণে সকল বিবাদীদের ব্যর্থতা নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ থাকে যে, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দেয়া হলে এই বিশাল কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদের সৃষ্টি হয়। ১৯৫৬ সালে শুরু হয়ে ১৯৬২ সালে শেষ হয় বাঁধের নির্মাণ কাজ। জল বিদ্যুৎ বাঁধের কারণে ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি ডুবে গিয়ে ৭২৫ বর্গকিলোমিটার কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্ট্রি হয় । ঐসব এলাকার মোট কৃষি জমির ৪০ শতাংশ। রাঙামাটির বরকল উপজেলার বড় হরিণা এলাকা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রান্তে হ্রদের সীমানা লুসাই পাহাড় টেকারমুখ। এরপর ভারতের মিজোরামেও এর বিস্মৃতি আছে।
মিজোরামের লুসাই পাহাড় থেকে কর্ণফুলীর উৎপত্তি।
রাঙামাটির আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির মহালছড়ি এলাকা জুড়ে হ্রদটির অবস্থান। বর্তমানে হ্রদের আয়তন ৬৮ হাজার ৮শ হেক্টর। রাঙামাটি পৌর এলাকায় হ্রদের জায়গা সবচেয়ে বেশি বেদখল হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর খাস জমি দখল করে স্থাপনা নিমার্ণ । চাকমা সার্কেল চীফ এক সনের অস্থায়ী লিজ দেয়া হয় চাষাবাদের জন্য কিন্ত অনেকেই চাষাবাদ না করে জলে ভাসা জমির ওপর স্থাপনা নিমার্ণ করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য যে, কাপ্তাই জলেভাসা জমি লিজ / বন্দোবস্তি প্রদান নিষিদ্ধ এবং বেয়াইনী ঘোষনা করা হয়। তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম বাজার ফান্ড প্রশাসক আলী হায়দার খান স্বাক্ষরিত ১৮/১০/১৯৮২ খৃী: স্বারক নং৭/৮২-১৩০৭
স্থানীয় সরকার পরিষদ /জেলা পরিষদ বাজার ফান্ড প্রশাসনে হস্তান্তর করা ১৯৮৯ খৃী: সর্বপ্রথম চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান ২০/৬/১৯৯২ খৃী: ২৪টি বন্দোবস্তি অনুমোদন করেন। জেলা পরিষদ আইন ৬৪ ধারা বাজার ফান্ড ম্যানুয়েল-১৯৩৭ এর ১৮,১৯,২০,২২ ও ২৩ ধারা- পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ এর ৩৪ ধারা প্রশাসনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য -ভুমি মন্ত্রনালয়ে(শাখা-১) প্রজ্ঞাপন ৯-১৬/৮৯-৫৭৯ তাং১৯/৭/৮৯ খৃী:আদেশ ক্রমে স্থানীয় সরকার পরিষদ প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান স্বাক্ষরিত ৩/৯/৮৯ খৃী: বাজার ফান্ড প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক মো: রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৩/৯/৮৯ খৃী: স্বারক নং৩০২ অবগতির জন্য অনুলিপি প্রদান করেন সচিব ভুমি প্রশাসন ও ভুমি সংস্কার । পরে ২০/৩/১৯৯৬ খৃী: চেয়ারম্যান পারিজাত কুসুম চাকমা ২৯৯ টি ৫/৮/১৯৯৭ খৃী: চেয়ারম্যান রবিন্দ্র লাল চাকমা ১৯৭টি ২/৩/২০০২ খৃী: চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা ৩২২টি চেয়ারম্যান মানিক লাল দেওয়ান ১৫/৭/২০০৭ খৃী: ০২টি চেয়ারম্যান জগতজ্যোতি চাকমা ৩০/৫/২০০৯ খৃী: ০১টি চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ২৯/৩/২০১৫ খৃী:০৩টি চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা ১৪/১২/২০২০ খৃী: বন্দো:১টি লীজ ৪০টি । এসব ভুমি অস্থায়ী ও কোন জরিফ হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংশু প্রু চৌধুরী বাজেট অনুষ্ঠানে বলেছিলেন,১৯৯২ সাল থেকে বন্দোবস্তি বন্ধ হওয়ার কারণে আমরা লিজ দিয়ে আসছি । আপনার-আমার সকলের বাড়ীর পিছনে খাস জমি । সুতারাং বন্দোবস্তির /ইজারা/লিজ আইন সংশোধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।