রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে বিচারিক হাকিমের বাসায় রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে পুরো চারতলা ভবনে চারজন বিচারক ভাড়ায় থাকলেও দুইজনের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে একজন বিচারকের বাসা থেকে আড়াই লাখ টাকার স্বর্ণালংকার চুরি হলেও আরেক বিচারকের বাসায় জিনিসপত্র উলটপালট করলেও কিছু নেয়নি চোর। এ ঘটনার পর রোববার রাতে (৪ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বাড়ি মালিক মো. আক্তার হোসেন। পুলিশ জানিয়েছে, রোববার থানায় মামলার গ্রহণের পর রাতেই পুলিশ দ্রুত তদন্তে নেমে এক আসামিকে গ্রেফদার করেছে। আসামি মোবারক হোসেন (৩২) জেলা শহরের হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট মধ্যকার সময়ের মধ্যে বাসায় না থাকার সুযোগে রাঙামাটি পৌর এলাকার দক্ষিণ কালিন্দপুরের আক্তার হোসেনের চারতলা বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। যে বাসায় ভাড়ায় থাকেন রাঙামাটির অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা ইয়াসমিন ও কোহিনুর আক্তার এবং জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম। তবে চুরি হয়েছে কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলমের বাসায়। এই বিচারকের বাসা থেকে ৩ ভরি ২ আনা স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারদর আড়াই লাখ টাকা বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে এছাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোহিনুর আক্তারের বাসার আসবাবপত্র, আলমারিসহ অন্যান্যস্থানে উলটপালট করলেও কোনো কিছু চুরি হয়নি বলে উল্লেখ রয়েছে এজাহারে।
চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি মো. কবির হোসেন জানান, দুইজন বিজ্ঞ বিচারকের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে বাড়ির মালিক বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলা গ্রহণের পর আমরা রাতেই মোবারক হোসেনকে নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছি, তাকে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
এদিকে, বিচারিক হাকিমদের বাসায় রহস্যজনক চুরিকা-ে পরিবারের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানা গিয়েছে। রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাজীব চাকমা জানান, বিচারকদের বাসায় চুরির ঘটনা আতঙ্কজনক ও উদ্বেগের। বিভিন্ন জেলায় বিচারকদের জন্য সরকারিভাবে আবাসিক কোয়ার্টার রয়েছে। কিন্তু রাঙামাটিতে আবাসিক কোয়ার্টার না থাকায় বিজ্ঞ বিচারকগণ ভাড়া বাসায় থাকছেন। নিয়মেই আছে বিচারকরা থাকবেন নির্দিষ্ট এলাকায়; যেখানে পুলিশি নিরাপত্তা বলয় থাকবে। কিন্তু এখন কেবল জিনিসপত্র চুরির ঘটনাই নয় বিচারকরা শারীরিকভাবেও নিরাপত্তাহীনতায় থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে দেশে বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের পর থেকে রাঙামাটির ম্যাজিস্ট্রেট কলোনিতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা থাকেন। নিজস্ব সরকারি কোয়ার্টার না থাকায় রাঙামাটির বিচারিক হাকিমদের থাকতে হচ্ছে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায়। তবে হঠাৎ করেই বিচারকের বাসায় চুরিকা-ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিচারক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।