রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হলো ‘রাজমনি পাড়া সীবলী বন বিহার’ নামে একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ বিহার। বিহারটি নির্মিত হওয়ায় প্রতিফলিত হয়েছে, এলাকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের আশা-আকাক্সক্ষা ও দাবি-দাওয়ার। রাঙামাটি পৌর এলাকার ভেদভেদী কলেজগেট সংলগ্ন রাজমনি পাড়ায় বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করে দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। যেটি শহরের বৌদ্ধ সম্প্রদায় অধ্যুষিত জনগুরুত্বপূর্ণ এবং মধ্যস্থলে নির্মিত হওয়ায় আশেপাশের সদ্ধর্মপ্রাণ অগণিত পুণ্যার্থীর পক্ষে পবিত্র প্রার্থনা আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মতব্যক্ত করেছেন, এলাকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন।
জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ৬০ লাখ টাকার সরকারি বরাদ্দে একটি প্রকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শুরু হওয়া ওই বৌদ্ধ বিহারের নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি বছর। ২০ আগষ্ট বৌদ্ধ বিহারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। এ সময় সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আশীষ কুমার বড়–য়া, নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা, বিহার পরিচালনা কমিটির অন্যতম উপাসিকা শ্যামলী চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় পাহাড়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার। এতে পাহাড়ের আর্থ-সামাজিকসহ বৃহত্তর জনস্বার্থে প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে রাঙামাটির জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘রাজমনি পাড়া সীবলী বন বিহারটি’ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
রাজমনি পাড়া সীবলী বন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি যুবলাল চাকমা বলেন, এলাকাবাসীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২০১৩ সালে বিহারটির স্থাপনার কাজ শুরু করা হয়েছিল। পরে সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর সার্বিক সহযোগিতায় প্রকল্প হাতে নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি এলাকাবাসীর পক্ষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুকৃতিময় চাকমা বলেন, সরকারি অর্থায়নে বিহারটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার জনগণ সবাই খুশি। এর ফলে আশেপাশে এলাকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অসংখ্য পুণ্যার্থীর ধর্মীয় কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে উজ্জীবিত সদ্ধর্মপ্রাণ মানুষজন। বিহারটি মূলত সর্বজনপূজ্য বনভান্তের অন্যতম উত্তরসূরি শ্রীমৎ ধর্মতিয্য ভান্তের পবিত্র অনুভূতি থেকেই গড়ে তোলা হয়েছে। এটি অদূর ভবিষ্যতে একটি অন্যতম ধর্মীয় তীর্থ হয়ে উঠবে।
বিহারটির নির্মাণ কাজের তদারককারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমেশ চাকমা বলেন, যথোপযুক্ত করে বিহারটি নির্মাণে যথাসম্ভব আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। যাতে এটি একটি মজবুত, টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা হতে পারে।