রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটি জেলা শহরের হাসপাতাল এলাকায় দুর্বৃত্তের চুরিকাঘাতে জয় ত্রিপুরা (২৭) নামের এক ছাত্রলীগ নেতা খুন হয়েছে। বুধবার রাত আনুমানিক আড়াইটার সময় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক তরুণকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তখনো জীবিত ছিলো সে, পরে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে জয় ত্রিপুরা।
নিহত ছাত্রলীগ নেতা জয় ত্রিপুরা রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক এবং জেলা শহরের দেবাশীষনগর এলাকার প্রয়াত খোকনমনি ত্রিপুরার ছেলে।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমিরউদ্দিন হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জমির ভাইকে চট্টগ্রামে রেফার করলে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। অন্য অনেকের মতো জয়ও তাকে দেখতে হাসপাতালে যায়, সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে তার মোটর-সাইকেল আটকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে চুরিকাঘাত করেছে বলে জেনেছি। পরে হাসপাতালে মারা যায় সে। আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ বলেন, ‘জয় যে এলাকায় থাকত সেখানে সে পাহাড়িদের মধ্যে একাই সক্রিয় ছাত্রলীগ নেতা ছিলো, তাকে প্রায়ই এ কারণে আঞ্চলিক একটি দলের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাতো বলে সে আমাদের জানিয়েছে বিভিন্ন সময়। এই ঘটনায় তারা কিংবা যেই জড়িত হোক না কেনো আমরা তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের বিচার চাই।
নিহতের মামা ঝিনুক ত্রিপুরা জানিয়েছেন, রাতে সে জমির ভাইকে দেখার জন্যই হাসপাতালে গিয়েছিলো। কে জানত নেতাকে দেখতে গিয়ে নিজেই লাশ হয়ে ফিরবে ঘরে। আমরা এই ঘটনার সাথে যে বা যারাই জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন ঝিনুক।
ঘটনার সময় হাসপাতালে থাকা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা জমীর ভাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বের হয়ে বাসা থেকে কিছু কাগজপত্র আনার জন্য হাসপাতালের গেটের কাছেই এ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছিলাম। তখনই হঠাৎ কিছু ছেলেপেলেকে হৈচৈ করতে দেখি এবং তারা কাউকে মারধর করছিলো। যেহেতু আমরা রোগি নিয়ে টেনশনে ছিলাম তাই ওইদিকে মনোযোগ কম ছিলো। পরে দেখি একটা ছেলে হাসপাতালের মেইন গেইটের কাছে কাঁতরাচ্ছে। আমি তাৎক্ষনিক ওসি কে ফোন করে বিষয়টি জানাই।’
কোতোয়ালি থানার ওসি কবির হোসেন জানিয়েছেন, ‘খবর পেয়েই রাতে আমরা সেখানে যাই। তার পেটে চুরিকাঘাত করা হয়েছে। লাশ বর্তমানে পোস্টমর্টেম এর জন্য মর্গে আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে বলতে পারছেনা কেউই। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের অবশ্যই আমরা খুঁজে বের করব।’